দর্পণ ডেস্ক : বয়স বাড়ছে। ৪০ পেরিয়েছেন। হয়তো আর পাঁচ–সাত বছরের মধ্যে রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজ ঘটে যাবে। সংসার আর পেশাগত ছোটাছুটিতে বেশিরভাগ নারীর অজান্তেই এই সময়টা এসে পড়ে। মেনোপজের আগে থেকেই নারীদের শুরু হয়ে যায় হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিসের প্রবণতা। হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করে। এর ফলে আরও বয়স বাড়লে নারীরাই বেশি শিকার হন ছোটখাটো দুর্ঘটনায় হাড়ভাঙা বা ফ্রাকচারের। তাই বয়স যখন ৪০ পেরোচ্ছে, তখনই হাড় নিয়ে সচতেন হওয়ার সময়। সহজ কিছু নিয়মকানুন পালন করে আপনি ঠেকাতে পারেন অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি।
১. বাড়িয়ে দিন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ। এ সময় থেকে প্রতিদিন অন্তত ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৬০০ থেকে ৮০০ ইউনিট ভিটামিন ডি দরকার শরীরে। প্রাকৃতিক ভিটামিন ডির উৎস সূর্যের আলো। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল তিনটার মধ্যে অন্তত ১৫-২০ মিনিট রোদে কাটান। তার সঙ্গে গ্রহণ করুন ডিম, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি। ক্যালসিয়ামের জন্য ছোট মাছ, দুধ, পনির, দই, পাতাওলা শাকসবজি খান প্রতিদিন। খাবারে ঘাটতি পড়ছে মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্টও নিতে পারেন।
২. আদর্শ ওজন বজায় রাখতে চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন স্থূলতা বা ওজনাধিক্য হলে সন্ধিক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়বে। আবার ওজন বেশি কমে গেলে বা স্বাস্থ্য খারাপ হলে অস্টিওপোরোসিস বেশি হয়। তাই সঠিক ওজনের জন্য পুষ্টিকর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
৩. ভারসাম্যের ব্যায়াম করুন। এই ব্যায়াম হাড় সন্ধির ভারসাম্য বাড়াতে ও পেশির শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। ফলে পড়ে গিয়ে বা ছোট দুর্ঘটনায় হাড়ভাঙা এড়াতে পারবেন। এছাড়া নিয়মিত হাঁটা, জগিং, সাঁতার, অ্যারোবিকস করতে পারেন।
৪. আনুষঙ্গিক নানা রোগবালাই সঠিক সময়ে শনাক্ত করুন ও চিকিৎসা নিন। এ বয়সে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদির ঝুঁকিও বেশি। এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৫. কিছু রোগ ও কিছু ওষুধ হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ায়। খেয়াল করুন থাইরয়েডের সমস্যা, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হজমের সমস্যা ইত্যাদিতে ভুগছেন কিনা। হাঁপানি বা ব্যথার কারণে বারবার স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ জীবনে খেয়েছেন কিনা। চিকিৎসককে এসব ঝুঁকি সম্পর্কে জানান।
৬. সময়ের আগেই মেনোপজ হয়ে গেলে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি। মেনোপজের সঠিক সময় ৪৫ থেকে ৫৫ বছর। তার আগে মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন। অস্টিওপোরোসিসের নানা আধুনিক চিকিৎসা আছে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল