দর্পণ ডেস্ক : রাজধানীর সবচেয়ে অপরিকল্পিত অংশ পুরান ঢাকা। এমন বাড়ি খুঁজে পাওয়া কঠিন, যার কোনো অংশ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে না। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মিলবে বিভিন্ন ধরনের কারখানা বা গুদাম। তবে, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক, কসমেটিকস, প্লাস্টিক দানা (পি.পি) অথবা প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য ও পলিথিনের কারখানাই বেশি। এসব পণ্য ভয়ঙ্কর দাহ্য পদার্থ হলেও এ নিয়ে ততটা সচেতন নয় এখানকার বাসিন্দারা।
দুর্ঘটনার পর রাসায়নিক বা দাহ্য পদার্থের কারখানা ও গুদাম মালিকরা হাওয়া হয়ে গেছেন। অধিকাংশ গুদামেই ঝুলছে তালা। স্থানীয়দের মতে, এ লুকোচুরি সাময়িক। যেকোনো সময় আবারও রমরমা হয়ে উঠবে রাসায়নিকের বাজার। বাড়িওয়ালাদের দাবি, অন্য ব্যবসার কথা বলে বাড়ি ভাড়া নিয়ে, পরে বানানো হয় কেমিক্যাল গুদাম।
তবে, রাসায়নিক গুদাম বা কারখানার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা, এটি মানতে নারাজ অনেকে। তাদের দাবি, পিকআপ ভ্যানে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণেই এ অগ্নিকাণ্ড। এ বিষয়ে সরকারকে নজর দিতে হবে। আবার অনেকে বলছেন, ভবনটিতে রাসায়নিকের এমন মজুদের কথা তারা কোনোভাবেই জানতেন না। কারণ, এসবের কোন শো-রুম এখানে নেই। দুর্ঘটনার পরই তারা জানতে পেরেছেন। কেউ কেউ স্বীকার করেছেন, প্রতিটি বাড়িতেই এ ধরনের কারখানা বা গুদাম থাকার বিষয়টি। দুর্ঘটনার পর, নিমতলীতেও অনেক কারখানা ফিরে এসেছে বলে দাবি করেন তারা।
এদিকে, এসব কারখানা সরিয়ে নিতে ইতোমধ্যে সব স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গঠিত অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান ও ভবিষ্যতে করণীয় নির্ধারণ কমিটির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন। তিনি জানান, নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের পর, হতাহতের ১৭টি কারণ খুজে পেয়েছিলেন তারা। এখানেও কমবেশি সেই কারণেই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। গাড়িতে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, তা ওয়াহেদ ম্যানশনের রাসায়নিকের গুদামে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক আকার ধারণ করাসহ বিভিন্ন কারণ খতিয়ে দেখছেন তারা।
২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৭ জন। নিহতদের মধ্যে ৪৮ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনাক্ত করা যায়নি ১৯টি মরদেহ আর এখনও অনেকে নিখোঁজ বলে দাবি করছেন তাদের স্বজনরা। তাদের তালিকা যাচাই বাছাই করে হতাহতের চূড়ান্ত তালিকা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।