দর্পণ ডেস্ক : পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে আমেরিকার উদ্যোগে আয়োজিত ইরান বিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার উপায় খুঁজে বের করা এ সম্মেলন আয়োজনের উদ্দেশ্য বলে প্রচার করা হলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওসহ দেশটির অন্যান্য কর্মকর্তারা বহুবার বলেছেন, মূলত এটি হবে ইরান বিরোধী একটি সম্মেলন। কিন্তু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশ ওয়াশিংটনের ইরান বিরোধী নীতির প্রতি সমর্থন না দেয়ায় সম্মেলন শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করতে পারেনি আমেরিকা। কিন্তু তারপরও সম্মেলন শেষে আমেরিকা ও পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন। ওয়ারশ সম্মেলন শুরুর প্রথম থেকেই ইরানের কর্মকর্তারা বলে আসছিলেন এটি হচ্ছে ইরান বিরোধী একটি সম্মেলন।

ওয়ারশ সম্মেলন ব্যর্থ হওয়ার পরও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেছেন, এ সম্মেলনে অন্তত ইরান ইস্যুতে ইসরাইল ও আরব দেশগুলোর নেতারা একমত হয়েছেন এবং তারা ইরানের হুমকির ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছেন। পম্পেও বলেন, তার ভাষায় ইরানের পক্ষ থেকে আসার হুমকির ব্যাপারে কোনো মতপার্থক্য দেখা যায়নি এবং তেহরানের ওপর আরো বেশি চাপ সৃষ্টি করার জন্য আমেরিকা ইরানের ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের বিরুদ্ধে তার বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণের জন্য ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব দেশ ও ইসরাইলের মধ্যে ঐক্যের কথা বলেছেন। অথচ ইরানের সঙ্গে ওই দেশগুলোর বিরোধ অনেক পুরানো। এ অবস্থায় ওই দেশগুলো ওয়ারশ সম্মেলনে ইরানকে হুমকি হিসেবে যে বক্তব্য দিয়েছে তার কোনো মূল্য নেই। কারণ বিষয়টি নতুন নয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল ও আরব দেশগুলোর কথা বললেও চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কথা বলেননি। কারণ এই দেশগুলো ইরানের ব্যাপারে মার্কিন নীতির বিরোধী অথবা রাশিয়ার মতো তারা ওয়ারশ সম্মেলনকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি এবং খুবই নিম্নস্তরের কর্মকর্তাদেরকে সম্মেলনে পাঠিয়েছে।

এ থেকে বোঝা যায় ইরানের ব্যাপারে আমেরিকার সঙ্গে ওই দেশগুলোর মতপার্থক্য বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

তিনি ইরানকে হুমকি ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী দেশ হিসেবে অভিহিত করে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ইউরোপের প্রতি আহ্বান জানান। এমনকি ইউরোপ বিশেষ পদ্ধতিতে ইরানের সঙ্গে লেনদেন করার যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকেও তিনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন বলে অবিহিত করেছেন। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।