মোঃ আবু সাঈদ,সিংড়া(নাটোর)প্রতিনিধিঃ চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন র্কতৃপক্ষের আওতায় গভীর ও অগভীর নলকুপের অতিরিক্ত সেচমুল্য আদায় বন্দের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগী কৃষকরা।সোমবার সকালে নাটোরের সিংড়া উপজেলার ২ নং ডাহিয়া ইউনিয়নের বড়গাঁও ও রঘুকদমা গ্রামের মাঠে কৃষকদের আয়োজনে এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন সমাবেশ করা হয়।এতে অংশ নেন বড়গাঁও,রঘু কদমা,হাতিয়ান দিঘী,ছাতুয়া,মষিগারী,তাড়াই, বড়ই চড়া সহ ৭ গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক ভুক্তভোগী কৃষক।
এসময় তাঁরা কৃষকদের দাবি মানতে হবে,সেচের ন্যায্য মুল্য নিতে হবে,কৃষক বাঁচাও,দেশ বাঁচাও,অতিরিক্ত সেচ মুল্য বন্দ করো,করতে হবে প্রভৃতি শ্লোগানে বিক্ষোভ করে। এর পর তাঁরা মানববন্ধনে অংশ নেয়।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শেষে কৃষকরা জানায়,সিংড়া উপজেলার বরেন্দ্র বহুমুখীর আওতাধীন এখানকার ৭ গ্রামের মাঠ জুড়ে প্রায় ২শত একর জমিতে ৩টি গভীর নলকুপ স্থাপন করা হয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন র্কতৃপক্ষ তাঁেদের আওতাধীন গভীর নলকুপের সেচমুল্য প্রতি ঘন্টায় ১২৫ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। পুরো মৌসুম প্রতি বিঘা জমির সেচমুল্য নির্ধারন হয়েছে ১হাজার ৫০০ টাকা। অথচ বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্পের তত্বাবধানে থাকা মালিক পক্ষের অপারেটররা তা মানছেননা। তাঁরা এই তথ্য গোপন করে কৃষকদের কাছ থেকে ২ হাজার ৮০০ শত থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত সেচমুল্য আদায় করছেন। অর্থাৎ কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি বিঘায় ১৩০০টাকা থেকে ১৫০০টাকা অতিরিক্ত বেশি সেচমুল্য নেওয়া হচ্ছে।
রঘু কদমা গ্রামের কৃষক মুনছুর আলী বলেন-বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জেনেছি সেখানে সেচমুল্য ১২৫০ টাকা আদায় করছে কিন্তুু আমাদের এখানে অতিরিক্ত মুল্য আদায় করায় আমরা চলতি মৌসুমের শুরুতেই আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থের শিকার হচ্ছি।
বড়গাঁও গ্রামের কৃষক মালেক সরকার বলেন-মটর ও ডিজেল চালিত নলকুপের চেয়ে গভীর নলকুপে স্বল্প খরচ পাবো এই আশায় আমরা এর আওতায় এসেছি কিন্তুু এখন দেখছি মটর ও ডিজেল চালিত নলকুপের চেয়েও পানি সেচের খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। হাতিয়ান দিঘী গ্রামের কৃষক জুয়েল রানা বলেন-এখানে ৩টি গভীর নলকুপের মালিক পক্ষের অপারেটর মতিন সরকার,শহিদুল ও হাশেমকে সেচমুল্য কমানোর কথা বল্লে তাঁরা কৃষকদের উপর ক্ষেপে যান এবং জমিতে পানি সেচ বন্দের হুমকি দেন। এমতাবস্থায় আমরা গত ০৭/০২/১৯ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একাটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের কোন ফল না পেয়ে আমরা এই দাবি আদায়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গভীর নলকুপের হাতিয়ান দিঘী মাঠের অপারেটর শহিদুল ইসলাম বলেন- কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত সেচমুল্য নিলে আমাদের কোন লাভ থাকেনা। কৃষকদের কাছ থেকে ২৬০০শ,২৮০০শ টাকা চাই। মুলত ২৫০০শ টাকা নেই। রঘু কদমা মাঠের অপারেটর মতিন সরকার ও হাশেম আলী একই মন্তব্য করে বলেন-আমাদের এই মাঠের জমি গুলোতে পানি টানে বেশি তাছাড়া আগের চেয়ে বিদ্যুত খরচও বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা এই টাকা নেই।
উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচীব ও উপজেলা কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ তহিদুল আলম বলেন-বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় উপজেলায় মোট ৭৪টি গভীর নলকুপ আছে। এলাকার জমি ভেদে সেচ মুল্য নির্ধারন করা হয়। উপজেলার চামারী ও খাজুরা ইউনিয়ন ব্যতীত ডাহিয়া,ইটালী সহ ১০টি ইউনিয়নের মাঠের জমির সেচমুল্য মৌসুমে প্রতি বিঘা ১৫০০টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন- অভিযোগ পেয়েছি,বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। নির্ধারিত সেচমুল্যের চেয়ে কেউ বেশি নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।