দর্পণ ডেস্ক : ইসলামি বিপ্লবের চল্লিশতম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘দেজফুল’ নামের অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে ইরান। ভূ-গর্ভস্থ একটি কারখানায় নির্মিত এই স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্রটি গতকালই উন্মোচন করা হয়েছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি প্রথমবারের মতো ওই ক্ষেপণাস্ত্র শহরটিও প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
স্মার্ট ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেজফুল ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।
দেজফুলের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আইআরজিসি’র কমান্ডার ইন-চিফ মেজর জেনারেল মুহাম্মাদ আলি জাফারি বলেছেন, মাটির অনেক গভীরে নির্মিত মিসাইল-সিটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে পশ্চিমাদের বাগাড়ম্বরের জবাব দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমারা ভাবতো ভয়-ভীতি, হুমকি ধমকি আর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানকে কোনঠাসা করে ফেলেছে এবং ইরানের বৃহৎ পরিকল্পনাগুলো বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়েছে।
বিপ্লবের চল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিনি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ইরানের পরিপূর্ণ সক্ষমতা অর্জনের কথা সগর্বে ঘোষণা করেন। জাফারি বলেন, ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আত্মরক্ষামূলক এবং জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোর অধীন। এ নিয়ে কোনোরকম আলোচনার সুযোগ নেই বলেও তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন।
গত সপ্তায়ও ইরান ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ১ হাজার ৩৫০ কিলোমিটার পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘হুভেইযে’উন্মোচন করেছে। ইরানি বিশেষজ্ঞরাই বিশ্বের সর্বোন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটির নকশা প্রণয়ন থেকে নির্মাণ পর্যন্ত সকল কাজ করেছে। ক্ষেপণাস্ত্রটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি বলেছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে হোভেইযে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য প্রস্তুত করা যায় এবং এই ক্ষেপণাস্ত্রটি খুব নিচু দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম।
‘খুররামশাহর’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইরানি বিশেষজ্ঞদের তৈরি আরেকটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র যার ধ্বংস ক্ষমতা অনেক বেশি। এসবই প্রতিরক্ষা শিল্পে ইরানের স্বনির্ভরতা এবং চোখ ধাঁধাঁনো অগ্রগতির প্রমাণ। সেইসঙ্গে ইরানের ওপর মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এবং বিচিত্র চাপ প্রয়োগের ব্যর্থতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
ভূগর্ভস্থ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ শহর প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ইরান ইউরোপ ও আমেরিকাকে এই বার্তাই দিতে চেয়েছে যে, দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষমতার উন্নয়নে ইরান কারো তোয়াক্কা করে না। তবে ইরানের এই প্রতিরক্ষা শক্তি ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বিপ্লবপ্রিয় আঞ্চলিক ও প্রতিবেশি দেশগুলোর জন্য বন্ধুত্ব ও শান্তির বার্তাবাহী।