দর্পণ ডেস্ক : জন্ম নেওয়ার আগে পর্যন্ত মায়ের গর্ভে বেড়ে ওঠে শিশু, এ কথা সকলেই জানেন। কিন্তু সেই গর্ভাবস্থাতেই যে সে অনেক কিছু জেনেবুঝে যায়, তা বোধ হয় জানা নেই আমাদের সকলের। সদ্য জন্মানো, চোখ না ফোটা, মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারা একরত্তি শিশু যা যা জেনে জন্মায়, তা জানলে রীতিমতো বিস্মিত হতে হয়।
গবেষণা বলছে, মায়ের পেটের ভিতরে যে অ্যামনিওটিক ফ্লুয়িডে ভেসে থাকে শিশু, তার মাধ্যমেই বাইরের জগতের অনেক কিছুই পৌঁছে যায় তার কাছে। এবং কয়েক মাস সময়ে, সে সব সম্পর্কে বেশ ভালই ধারণা তৈরি হয়ে যায় তার।
শব্দ
গর্ভাবস্থায় মা যত কথা বলেন, গর্ভের শিশু কয়েক মাস পর থেকেই সেই সব শব্দ টেপ রেকর্ডারের মতো শুনতে পায়। তাই জন্মের পরে মায়ের গলা চিনতে খুব একটা অসুবিধা হয় না শিশুর। এমনকী গর্ভাবস্থায় মায়ের আশপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কণ্ঠস্বরও তার পরিচিত মনে হয়।
ভাষা
গর্ভে থাকাকালীন কানের গঠন তৈরি হওয়ার পর থেকেই শিশু তার মাতৃভাষা সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করে। যদি কখনও কল্পনা করেন, মাতৃগর্ভে চোখ বুজে, কান খাড়া করে আপনাদের কথাবার্তা শুনছে শিশু তা হলে খুব ভুল ভাবেননি। পেটের ভিতরে শিশুর হাবভাব অনেকটা এ রকমই থাকে।
স্বাদ
গর্ভে থাকার আট থেকে পনেরো সপ্তাহের মধ্যেই শিশুর এই ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। তখন থেকেই সে আলাদা করতে পারে মিষ্টি, টক আর তেতো স্বাদ। তাই জন্মের কয়েক মাস পরে যখন সে খাওয়াদাওয়া শুরু করে, তখন এই তিনটে স্বাদের বাইরে নতুন কোনও ফ্লেভার জিভে ঠেকলে, সে ভালই বুঝতে পারে তারতম্য।
আলো
ভ্রূণ অবস্থায় সাত সপ্তাহের আগে তার চোখই ফোটে না ভাল করে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সেই অবস্থাতেও মাতৃগর্ভের অন্ধকারে কোনও ভাবে আলো পৌঁছে দিলে, সে তার চোখ সরিয়ে নিচ্ছে। এমনকী জন্মের সময় যত কাছাকাছি এগিয়ে আসে, তত চোখ পিটপিট করতে শেখে সে। পৃথিবীর চড়া আলোকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য পেটের ভিতরেই চলে প্রস্তুতি।
গন্ধ
মায়ের পেটে যে ফ্লুইডে শিশু ভেসে থাকে, তার গন্ধ হয় অনেকটাই মায়ের শরীরের গন্ধের মতো। তাই জন্মের পরে মায়ের গায়ের সেই গন্ধ সহজেই বুঝতে পারে সে। তাই মায়ের কোলেই সব চেয়ে নিরাপদ বোধ করে। জন্মের পরে আলাদা করে মায়ের গায়ের গন্ধ চিনতে হয় না তাকে।