দর্পণ ডেস্ক : প্রশাসনের সহযোগিতায় দীর্ঘ ৯ মাস পাঁচদিন পর বাড়িতে ফিরলেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের পারমল্লিকপুর গ্রামের দুইশ পরিবার। একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে তারা বাড়ি ছাড়েন। বিবাদ নিরসনের লক্ষ্যে পারমল্লিকপুর ফুটবল মাঠে সম্প্রীতির বন্ধন বিষয়ক সভার আয়োজন করা হয়।

কোটাকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শামসুল হক কচির সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন, পুলিশ সুপারের সহধর্মিণী নাহিদা চৌধুরী সুমী, লোহাগড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এমএম আরাফাত হোসেন, লোহাগড়া থানার ওসি প্রবীর বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু প্রমুখ।

পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, ওই গ্রামের মানুষ সামাজিকভাবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে নিজ গ্রামে বসবাস করতে পারে এ জন্য আজকের এই সম্প্রীতির বন্ধন। এতে দু-পক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। উভয়পক্ষ মিলেমিশে বসবাস করবে।

জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। সেখানে পারমল্লিকপুর গ্রামবাসী মারামারি করে আরও পেছনের দিকে ফিরে যাচ্ছে। আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। এলাকার অশান্তি নিরসনের মাধ্যমে সবাই যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সে জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন একযোগে কাজ করবে।

ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের মাতবর হেমায়েত হোসেন হিমু বলেন, আমরা বাড়িতে ফিরে এসেছি। তবে ঘরের জানালা খুলে নেয়ায়, ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলায় ও আসবাবপত্র লুটপাট করে নেয়ায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নতুন করে বাড়িঘর নির্মাণ ও মেরামতের মাধ্যমে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছি। ছেলে-মেয়েদের পুনরায় স্কুলে ভর্তি করাব।

লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের পারমল্লিকপুরে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে হেমায়েত ও ইউপি মেম্বার উজ্জ্বল ঠাকুর গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ২০১৮ সালের ২১ এপ্রিল দুই পক্ষের সংঘর্ষে উজ্জ্বল গ্রুপের খায়ের মৃধা নিহত হন। ওই হত্যকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বোন রোকসানা বেগম বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় ৫১জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উজ্জ্বল গ্রুপের লোকজন আসামি পক্ষ হেমায়েত হোসেন হিমু গ্রুপের ২শ পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে ফেলে, মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। ওই সময় পরিবারের সদস্যদের মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর পর তারা বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ও উপজেলা শহরে বাসা ভাড়া করে বসবাস করতেন।