দর্পণ ডেস্ক :  থাইল্যান্ডে দুই মানবাধিকার কর্মীর বিকৃত বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা রাজতন্ত্রের কট্টর সমালোচক ছিলেন। গত মাসে উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডের একটি নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এক মাস পর পুলিশ বলছে, মেকং নদী থেকে উদ্ধারকৃত বিকৃত লাশ দুটি দেশটির দুই মানবাধিকার কর্মীর।

দেশটির নির্বাসিত রাজনীতিক ও রাজতন্ত্রের কট্টর সমালোচক সুরাচি সায়ে-ড্যানের দুই সহযোগী ছিলেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, মেকং নদীতে গত মাসে ওই দুই মানবাধিকার কর্মীর লাশ পাওয়া যায়। তাদের মুখ বিকৃত করে দেয়া ছিল। এছাড়া পেট ফুটো এবং শরীরের নিচের দিকে কংক্রিটের ব্লক বাঁধা ছিল।

২০১৪ সালে থাইল্যান্ডে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দুই মানবাধিকার কর্মী রাইদেজ লুলের্ত ও কমরেড পুচানা এবং সুরাচি সায়ে ড্যান লাওসে পালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত ১২ ডিসেম্বর তারা নিখোঁজ হন। দু’জনের বিকৃত মরদেহ উদ্ধার হলেও সুরাচির ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, থাই সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত লাওসে বসবাসকারী অন্তত পাঁচজন গত দুই বছরে নিখোঁজ হয়েছেন।

গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে তাদের লাশ দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেকং নদীতে ভাসতে দেখা যায়। দু’জনের লাশ বস্তার ভেতরে জেলেদের মাছ ধরার জালে পেঁচানো এবং দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। ডিএনএ পরীক্ষার পর তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।

অসমর্থিত একটি থাই সূত্র বলছে, ওই নদীতে তৃতীয় আরো একজনের মরদেহ ভেসে উঠেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। থাই সরকার অনুমোদিত ডেথ স্কোয়াডের সদস্যরা অপহরণের পর এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা।

এ নিয়ে তাদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা।

২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের পর বেশ কিছু মানবাধিকার কর্মীকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেছে থাই সরকার। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ব্যর্থ হয়েছে।

সুরাচি সায়ে-ড্যানের আসল নাম সুরাচি ড্যানওয়াত্তানানুসর্ন। ১৯৭০ সাল থেকে তিনি থাই রাজতন্ত্র এবং থাই সেনাবাহিনীর কট্টর সমালোচনা করে আসছেন। রাজতন্ত্রকে অবমাননার দায়ে তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন।

সর্বশেষ তাকে ২০১২ সালে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল; কিন্তু পরের বছর তিনি রাজক্ষমা পেয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।