দর্পণ ডেস্ক : সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের দ্বিতীয় দফা মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

টানা চার ঘণ্টা রুদ্ধদার বৈঠক শেষে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

এসময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘আমরা এখানে যেমন সহাবস্থানে সভা করেছি, তেমনভাবে মধুর ক্যান্টিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সহাবস্থান কার্যকর করে তারপর তফসিলের দাবি জানিয়েছি। ভোটার এবং প্রার্থিতার ক্ষেত্রে যারা ডাকসুর ফি প্রদান করে সবাইকে এ সুযোগ দিতে হবে। এখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না’।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ছাত্রদল সর্বশেষ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাস ছেড়েছে তাদের নিজেদের ঝামেলার কারণে। তাদের অতীতের কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে ইতিবাচক ধারায় তারা আসুক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বর্তমানে প্রতিটি হলে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছে। বাকিরা অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী। প্রতিটি হলে প্রভোস্টদের কর্তৃত্ব রয়েছে। ছাত্রদল তাদের নেতাকর্মীদের লিস্ট প্রশাসনকে দিক আমাদের কোনো আপত্তি নেই’।

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ভোটকেন্দ্র ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে আনার জন্য প্রশাসনের কাছে অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন দাবি জানিয়েছে। আমরাও একই দাবিতে একমত। একইসঙ্গে, যারা ডাকসু ও হল সংসদের জন্য ফি দেন তাদের ভোটার ও প্রার্থী করার দাবি জানানো হয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানিয়েছি। যাতে সবার জন্য সহাবস্থান থাকে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আচরণবিধি কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, শুনেছি যারা এই দুই কমিটিতে দায়িত্ব পেয়েছেন তারা সবাই একটি দলের অনুসারী। আমরা চাই সব সংগঠনের নেতাদের পরামর্শ নিয়ে এসব কমিটি গঠন করা হোক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্বিতীয় দফা মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়

সভা শেষে উপাচার্য আখতারুজ্জামান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সভায় গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গঠনতন্ত্র নিয়ে যে সুপারিশ করা হয়েছে তা সিন্ডিকেট সভায় উঠবে। সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবেন। তফসিলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে তফসিল দেওয়া হবে। আমরা নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ৩১ মার্চকে সামনে রেখেই এগোচ্ছি’।

সভায় ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। এছাড়াও এ মতবিনিময় সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ, উপউপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানীসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের দুই গ্রুপ, জাসদ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্রমৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র আন্দোলনসহ ১৪টি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।