দর্পণ ডেস্ক : স্বাস্থ ভাল রাখতে গরম পানির ভূমিকা অপরিসীম। ত্বক, পেশি এবং স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে হালকা গরম পানি পান করা উচিৎ। প্রতিদিন কয়েক গ্লাস উষ্ণ অথবা গরম পানি পান করলেও অনেক সুফল পাওয়া যেতে পারে। অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করেন, স্বাস্থ্য ভাল রাখার একটি সহজ উপায় গরম পানি।

জেনে নেয়া যাক গরম পানির সুফল গুলো-

হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি
যদি কেউ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করে তাহলে খাদ্য এবং পানীয় থেকে দেহ যে পানি পায় তার প্রায় সবটুকুই ক্ষুদ্রান্ত্র শোষণ করে নেয়। এর ফলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হতে পারে এবং অন্ত্রে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী পানিশূন্যতার কারণে দীর্ঘমেয়াদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। তা থেকে অন্ত্রের ব্যথা এবং অন্যান্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন হেমোরোইডস বা অর্শরোগ এবং ব্লটিং বা উদরস্ফীতি। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে এ সকল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।

রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি
গরম পানি রক্তনালী সম্প্রসারণ করে যার ফলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এটি পেশি সঞ্চালনকে আরামদায়ক করে এবং ব্যথা কমায়। যদিও গরম পানির সাথে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধির যোগসূত্র নিয়ে কোনো সরাসরি গবেষণা হয়নি, তবুও ধারণা করা হয় রক্তনালীর ক্ষণস্থায়ী সম্প্রসারণের ফলেও পেশি এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্য দিয়ে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

ওজন কমানো
দীর্ঘদিন ধরেই গবেষকেরা দাবি করে আসছেন,পানি বেশি পান করলে ওজন হ্রাস পায়। এর একটি কারণ হতে পারে, পানি পান করলে খিদে কম লাগে। এছাড়াও পানি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে এবং দেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। ২০০৩ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায় ঠাণ্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির চাইতে গরম পানি পান করলে ওজন হ্রাসের হার বেড়ে যায়। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে খাওয়ার আগে ৫০০ মিলি. পানি পান করলে খাদ্য পরিপাকের হার ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। পানির তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি করলে পরিপাকের হার বেড়ে যায় ৪০ শতাংশ। পরিপাকের এই হার ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
গরম পানি বিশেষত আঘাতপ্রাপ্ত পেশিতে রক্তের প্রবাহ এবং সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। তবে ব্যথা কমাতে গরম পানির ভূমিকা নিয়ে কোনো সরাসরি গবেষণা নেই। যা হোক, মানুষ ব্যথা কমানোর জন্যে নিয়মিত হিট প্যাক এবং গরম পানির বোতল ব্যবহার করে। গরম পানি পান করলে হয়ত অভ্যন্তরীণ ব্যথা কিছুটা কমতে পারে, কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে তাপ দেয়ার ফলে আঘাতপ্রাপ্ত অংশ কিছুটা ফুলে উঠতে পারে।

সাইনাসের সমস্যা কমাতে
ঠাণ্ডা লাগার ফলে এবং অ্যালার্জির কারণে সাইনাসের উপর যে চাপ সৃষ্টি হয় তা উপশম করতে তাপের বেশ ভাল ভূমিকা রয়েছে। ধোঁয়াও এক্ষেত্রে সুফল দিতে পারে। গরম পানি পান করলে মিউকাস বা শ্লেষ্মা জাতীয় পদার্থ নরম হয় কিংবা গলে যায়। এর ফলে কাশি ও সর্দি বেড়ে যায় এবং ভিতরে জমে থাকা পদার্থ দ্রুত বের হয়ে আসে। ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়।

স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে
এক কাপ গরম পানি ক্লান্তি এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে পারে। একটি পুরনো গবেষণা থেকে দেখা যায় গরম পানীয়, যেমন চা কিংবা কফি স্ট্রেস কমাতে ও দুশ্চিন্তা হ্রাস করতে সাহায্য করে। গবেষণায় বলা হয়, এর কিছুটা ঘটে ক্যাফেইনের প্রভাবে। তবে এক্ষেত্রে উষ্ণতারও ভূমিকা রয়েছে।