লিটন হোসেন লিমন, নাটোর প্রতিনিধি :
যথাযোগ্য মর্যাদায় নাটোরের লালপুর উপজেলার শহীদ সাগর স্মৃতি ফলক প্রাঙ্গণে শহীদ সাগর দিবস পালন করা হয়েছে। শনিবার এ উপলক্ষ্যে স্মৃতি ফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান শেষে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান ও জীবন উৎসর্গ করার স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছরে সরকার শহীদ সাগর দিবসের গণহত্যায় জীবন উৎসর্গকারী লে. আনোয়ারুল আজিমকে স্বাধীনতা দিবস পদক প্রদান করেছে। এই পদক প্রদানের মধ্য দিয়ে ঐদিন আনোয়ারুল আজিমের সাথে জীবনদানকারী অন্য সকলকেও মূল্যায়ন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ-শহীদ সাগর দিবসের আতœদানকে মূল্যায়ন করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বক্তারা। নর্থ বেঙ্গল চিনিকল কর্তৃপক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-শহীদ আনোয়ারুল আজিমের ছেলে ডাঃ আনোয়ারুল ইকবাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু ও সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী, নর্থ বেঙ্গল চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রমুখ। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে সকাল থেকে কোরআন খানীর আয়োজন করা হয় এবং সবশেষে শহীদদের আতœার শান্তি কামনা করে দো’য়া করা হয়। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে লালপুরের নর্থবেঙ্গল চিনিকল প্রাঙ্গণে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো পাক হানাদার বাহিনী। চিনিকলে কর্মরতদের ওপর আক্রমণে সেদিন শহীদ হয়েছিলেন চিনিকলের তৎকালীন প্রশাসক লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজিমসহ অর্ধ শত কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারী। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যার পর মরদেহগুলো স্থানীয় পুকুরে ফেলে দেয় পাক হানাদার বাহিনী। শহীদদের রক্তে সে দিন লাল হয়েছিল পুকুরের পানি। এরপর থেকে সেই পুকুরের নাম দেয়া হয় শহীদ সাগর। দিবসটি পালিত হয়ে আসছে শহীদ সাগর দিবস হিসেবে। শহীদ সাগর এলাকায় তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিফলক ও শহীদ স্মৃতি যাদুঘর।