অনলাইন ডেস্ক : ভ্যাপসা গরম আর রোদে ঘাম হওয়ারই কথা। ঘামে শরীর চিটচিট করলে কার না মেজাজ বিগড়ে যায়! কিন্তু পরিত্রাণের উপায় কী?
শরীরের ঘাম-গ্রন্থিগুলো আসলে খুব গরমে ঘামের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে শরীরকে শীতল করে। শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে এটি একটি কার্যকর প্রক্রিয়া। কিন্তু কেউ কেউ খুব বেশি ঘামেন। কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে অস্বাভাবিক বেশি ঘাম হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিষয়টিকে হাইপার হাইড্রোসিস বলে।
অনেকে অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই ঘামেন। অল্প গরমেই একেবারে অস্থির হয়ে নেয়ে ওঠেন। প্রতি ১০০ জনে তিনজন মানুষের এ সমস্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে, হাত-পা বা বগল প্রভৃতি জায়গায় ঘাম বেশি হয়। সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তাই এর নাম ইডিওপ্যাথিক হাইপার হাইড্রোসিস। অতিরিক্ত গরম, আবেগ, উত্তেজনা এবং গরম মসলাদার খাবার তাদের ঘাম বাড়িয়ে দেয়।
আবার মেরুদণ্ডের কোনো রোগ বা আঘাতে কোনো একটা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এক হাত বা এক পা অথবা শরীরের বিশেষ কোনো দিক বা অংশ বেশি ঘামতে পারে। শুধু হাত-পা নয়, বিভিন্ন অসুখের কারণে সারা শরীর বেশি ঘামতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা থায়রোটক্সিকোসিস বা নারীদের মেনোপজের পর হরমোনের তারতম্যের কারণেও ঘাম বেশি হতে পারে। আবার লসিকা গ্রন্থির ক্যান্সার ও ওষুধের প্রভাবেও এটি হতে পারে।
অতি উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যা আছে যাদের, তারাও অতিরিক্ত ঘামতে পারেন। খাওয়ার পরে বা খেতে বসলে ঘেমে যান অনেকে। এমনটা হয় ডায়াবেটিসজনিত স্নায়ুরোগে। ফেসিয়াল নার্ভে সমস্যা হলেও এ সমস্যা দেখা দেয়। এমনিতে জ্বর, আকস্মিক শারীরিক পরিশ্রম, গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় বেশি ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।
বরং অতিরিক্ত ঘাম এড়ানোর জন্য এই সময় ঠাণ্ডা ও প্রচুর পানিযুক্ত খাবার, ফলমূল ও সবজি খান। বেশি ঝাল-মসলাদার ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। রোদ ও গরম থেকে বাঁচতে পাতলা সুতি হালকা রঙের জামা-কাপড় পরুন, ছাতা বা হ্যাট ব্যবহার করুন। পা ঘামলে জুতো না পরে এ সময় খোলা স্যান্ডেল পরুন, মোজা এড়িয়ে চলুন। ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো নিঃসরণ কমায়, কিন্তু ডিওডোরেন্ট কেবল ঘামের গন্ধ আড়াল করে।
খুব বেশি যারা ঘামেন, তারা অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে এগুলো বেশি ব্যবহার করলে শরীরের ত্বকের রন্ধ্র আটকে গিয়ে অ্যালার্জি হতে পারে।
জাঙ্ক ফুড ও সফট ড্রিংকস: যতোটা সম্ভব জাঙ্ক ফুড, কোল্ড ড্রিংকস এড়িয়ে চলা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গরমে বেশি করে পানি পান করুন। দিনে আট ঘণ্টা ঘুমান। এসব নিয়ম মেনে চললে হজমের সমস্যা একদমই থাকবে না।