দর্পন ডেস্ক : কলকাতা বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠতে পারে! রিখটার স্কেলে এর ন্যূনতম মাত্রা ৬.১ থেকে সর্বাধিক ৬.৮ হতে পারে। ধসে পড়তে পারে পার্ক স্ট্রিট, সল্টলেক, নিউ টাউন, রাজারহাট, দমদম, নাগেরবাজারের মতো জনবহুল এলাকাগুলো। ধূলিস্যাৎ হতে পারে সিঁথি, কালিদহ, নোয়াপাড়া, দক্ষিণদাড়ি, গোপালপুর, তেঘরিয়া, বেরাবেরি, দুর্গানগর ও মহিষবাথানসহ বিভিন্ন এলাকা। আগামী ৫০ বছরে এ আশঙ্কা আরও ১০ শতাংশ বাড়বে।
ভূমিকম্প কলকাতা শহর ও তার আশপাশের এলাকাগুলোকে কতটা নাড়িয়ে দিতে পারে তা বুঝে রাজ্য প্রশাসন যাতে আপৎকালীন ব্যবস্থা নিতে পারে- সে জন্য একটি ‘সিসমোলজিক্যাল মাইক্রোজোনেশন ম্যাপ’ বানিয়েছে খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি)। কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা সেই মানচিত্রে ভূমিকম্পের এ ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
আইআইটির অধ্যাপক শঙ্কর কুমার নাথের নেতৃত্বে গবেষক দলের এ গবেষণাপত্রটি ইউরোপিয়ান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘ন্যাচারাল হ্যাজার্ডস অ্যান্ড আর্থ সিস্টেম সায়েন্সেস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আরও দু’টি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জার্নাল অব আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিং’ ও ‘জার্নাল অব সিসমোলজি’-এ প্রকাশ করা হয়েছে।
মানচিত্রে বলা হয়, ভূগর্ভের জলস্তর অন্য জায়গাগুলোর তুলনায় অনেক উপরে থাকায় এবং তার খুব সামান্য নিচে পলিমাটি থাকায় তীব্র জলোচ্ছ্বাসে রাজারহাট, কৃষ্ণপুর, নিকো পার্ক, মহিষবাথান, নিউ টাউন, সল্টলেক, নারকেলডাঙা, শিয়ালদহ স্টেশন, বেলেঘাটা, বাগবাজার, বিবাদি বাগ, পার্ক স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস, বালিগঞ্জ, ঢাকুরিয়া ও কসবাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার কার্যত ‘সলিলসমাধি’ ঘটতে পারে। যার জেরে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে ২৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ ধরলে পরিমাণ হবে ৫০ হাজার কোটি টাকা।
শুধুই কলকাতা নয়, এরই মধ্যে শিলং, গুয়াহাটিসহ ভারতের ছয়টি শহরের ক্ষেত্রে এ ধরনের মানচিত্র বানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় দেশের ভূকম্পপ্রবণ মোট ৩০টি শহরের ক্ষেত্রে এ মানচিত্র তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দেশের আরও আটটি শহরে এ মানচিত্র বানানো হবে। তাদের মধ্যে রয়েছে- পটনা, বারাণসী, লক্ষ্ণৌ, আগরা, মেরঠ, অমৃতসর, কানপুর ও ধানবাদ।আনন্দবাজার