যে কোনো সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর একটি আসনে চোখ থাকে সবার। আসনটি ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ঢাকা-১৭।
গুলশান, বনানী, ঢাকা সেনানিবাস ও ভাসানটেকের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে এবার বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচন করছেন।
এ আসনে লড়ছেন মহাজোটের দুই প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (লাঙ্গল) এবং আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।
এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ নিয়ে ভোট করছেন বিজেপির সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ।
এ ছাড়া এই আসনে লড়ছেন তৃণমূল বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্যও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে প্রচারে মূলত দুজনকেই দেখা যাচ্ছে। তারা হলেন নৌকার প্রার্থী ফারুক। আর ধানের শীষের পার্থ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চিকিৎসা নিতে বিদেশ থাকায় প্রচারে অংশ নিতে পারেননি। প্রচার শুরু হওয়ার প্রথম এক-দুদিন তার পক্ষে প্রচার চালান নগর জাপার নেতারা।
এই আসনের প্রচারে আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছেন। তিনি দিনরাত পুরো এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। তার পক্ষে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকজনও অংশ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে অনেকটা গা বাঁচিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন আন্দালিব রহমান পার্থ। শুরুর দিকে তাকে গণসংযোগে খুব একটা দেখা যায়নি। পরে অবশ্য তিনি জোরোশোরেই মাঠে নামেন।
পার্থের অভিযোগ-তার প্রচার-গণসংযোগে বাধা দেয়া হচ্ছে। তার কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
এদিকে দলীয় নেতাকর্মী, আত্মীয়স্বজন, চলচ্চিত্রশিল্পীদের নিয়ে পুরোদমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তিনি ব্যক্তিইমেজ ও দলীয় ভোটব্যাংক কাজে লাগাতে চাইছেন।
নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে নির্ঘুম রাত-দিন পার করছেন নৌকার এ মাঝি।
তবে ব্যক্তিইমেজে পিছিয়ে নেই তরুণ আন্দালিব রহমান পার্থও। তার বাবা অবিভক্ত ঢাকার প্রথম মেয়র ছিলেন। এরশাদের মন্ত্রিসভার জাদরেল মন্ত্রী ছিলেন। পার্থও টিভি টকশো ও সংসদে বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে তরুণদের নজর কেড়েছেন।
তার ঢিমেতালে চলছে পার্থের প্রচার। ভোটের আর মাত্র দুদিন বাকি। অথচ এখনও সব জায়গায় তার পোস্টার লাগানো হয়নি।
বনানী, বারিধারা, গুলশান ও ভাসানটেক এলাকায় চোখে পড়েনি ধানের শীষের পোস্টার। বিএনপি কিংবা ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের নির্বাচনী তৎপরতাও চোখে পড়েনি।
ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের ধরপাকড়, ভয়ভীতি দেখানো এখনও অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনী মাঠে থাকলেও কোনো ধরনের পরিবর্তন আসেনি। তবে ভোটের মাঠ থেকে আমরা সরব না। যে কোনো মূল্যে আমরা মাঠে থাকব।
অন্যদিকে শেষ মুহূর্তে প্রচার আরও জোরদার করেছেন নায়ক ফারুক। রোজ ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোরে জনসংযোগ শুরু করে শেষ করেন মধ্যরাতে।তার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।
গতকাল বিকাল ৩টায় কড়াইল বস্তিতে গণসংযোগ এবং সমাবেশ করেন ফারুক। জনসভা শেষে রোড শো করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। এ ছাড়া ভাসানটেক, বনানী, গুলশান ও বারিধারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছেন নৌকার এই প্রার্থীর পক্ষে। নৌকার সমর্থনে চলচ্চিত্রশিল্পীরাও নেমেছেন ভোটের মাঠে।
কড়াইল বস্তির সমাবেশে নায়ক ফারুক বলেন, বিগত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন আপনারা দেখেছেন। উন্নয়নের অংশীদার হতে এবার আপনাদের আসন থেকে আমি নৌকার প্রার্থী হয়েছি। নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আপনাদের পাশে থাকার সুযোগ দিন আমাকে।