শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত হয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গারা একটি প্রজন্মকে হারাতে বসেছে। নতুন একটি প্রতিবেদনে এমন হুশিয়ারি দিয়েছে।

২০১২ সালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গা শিশু ও যুবকদের চরম বিধিনিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে। যে কারণে তারা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।

শিশুদের সেখানে বিচ্ছিন্ন স্থাপনার ভেতরে রাখা হচ্ছে। এতে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের আওতার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। বয়স্ক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন না।

যুক্তরাজ্যে বার্মিজ রোহিঙ্গা সংগঠন বৃহস্পতিবার এমন তথ্য জানিয়েছে।

গত বছরের আগস্টের শেষ দিকে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ধরপাকড় থেকে বাঁচতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আগে থেকে আরও চার লাখ এখানে অবস্থান করছেন।

কর্তৃপক্ষ তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছেন। এমনকি স্থায়ী বিদ্যালয় ভবনের মতো যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণেও নিষেধ আছে।

কাজেই বিকল্প হিসেবে এসব শিশুর অনানুষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। যেগুলো বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা পরিচালনা করে আসছে।

ব্রিটিশ রোহিঙ্গা সংগঠনের প্রধান টুন খিন বলেন, এখন সবার আগে রোহিঙ্গাদের পড়াশোনার সুযোগ দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দিতে পারেন। কিন্তু চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে তাদের জন্য শিক্ষাগ্রহণ একেবারে অসম্ভব।

কাজেই এভাবে একটি প্রজন্ম আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটসের কুইনলে বলেন, রাখাইন রাজ্যে জাতিগত বিভাজনের ভেতর বছরের পর বছর ধরে বৈষম্য সহ্য করে শিক্ষক সংগ্রহ তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্রিটেনভিত্তিক রোহিঙ্গা সংগঠনটি জানায়, গত বছরের আগস্টের শুরুতে যেসব শিক্ষক এসেছেন, তাদের ২১ শতাংশের শিক্ষা মাধ্যমিক স্তর ছাড়িয়ে। রাখাইনে বিদ্যমান বিভাজনের অর্থ হচ্ছে-রোহিঙ্গা শিক্ষকদের ভ্রমণের অনুমতি নেই। কাজেই তারা সরকার পরিচালিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও যেতে পারেন না।