স্কুলের গভর্নিংবডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় বলেছেন, প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে আমার পদত্যাগের প্রয়োজন হলে আমি করব।
নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রির আত্মহত্যার পর শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের সামনে অরিত্রি আত্মহত্যার ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল দেশের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে স্কুলের শিক্ষকরা এসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
পরবর্তীতে শিক্ষকদের সঙ্গে দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলতে সব শিক্ষার্থী স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে।
তবে কোনো অভিভাবককে তাদের সঙ্গে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এর আগে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল ছয় দফা দাবির স্মারকলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে।
দাবিগুলো হচ্ছে-
• অধ্যক্ষের পদত্যাগ এবং ৩০৫ ও ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অপরাধে অধ্যক্ষের শাস্তি নিশ্চিত করা।
• প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আচরণ ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে মানসিক স্বাস্থ্যের বিবেচনা করে আলাদা যত্ন নিতে হবে। কোনোভাবেই শারীরিক ও মানসিক চাপ এবং অত্যাচার করা যাবে না।
• কথায় কথায় বহিষ্কারের হুমকি দেয়া বন্ধ করে অন্যায় ডিটেনশন পলিসি বন্ধ করতে হবে।
• বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও কর্মরত সবার মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে মানসিক পরামর্শদাতা থাকতে হবে। শৃঙ্খলাভঙ্গকারী শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে হবে।
• গভর্নিংবডির সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।
• অরিত্রির মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য অধ্যক্ষ ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
এ দাবির মধ্যে ১, ৫ ও ৬ নম্বর দাবি এখনই মেনে নিতে হবে এবং ২,৩ ও ৫ নম্বর দাবি মেনে নেয়ার জন্য লিখিত দিতে হবে। তবেই শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করবে। আর না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
গত সোমবার অরিত্রির আত্মহত্যার পর দিন থেকে রাজধানীর বেইলি রোডে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে কিছু অভিভাবকও যোগ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক অরিত্রির সহপাঠী আনুশকা রায় বলে, আজকের মধ্যে সব দাবি মেনে নিতে হবে। নইলে আন্দোলন চলতে থাকবে।
গত দুদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভিন্ন স্লোগান লেখা পোস্টার-ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।