দর্পণ ডেস্ক : গতকাল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিনে রাজধানী ঢাকার দুই রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ছিল প্রার্থী ও সমর্থকদের পদচারণায় মুখর। ঢাকা জেলার ঢাকা-১. ঢাকা-২, ঢাকা-৩, ঢাকা-১৯ ও ঢাকা-২০ এই পাঁচটি আসনের রির্টার্নিং কর্মকর্তা ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস মনোনয়নপত্র বাছাই করেন। তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন এসব আসনের প্রার্থীরা।
অন্যদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত বাকি ১৫টি আসনে (ঢাকা-৪ থেকে ঢাকা-১৮) মনোনয়নপত্র বাছাই করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কেএম আলী আজম। তাকে সহায়তা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তিনি সেগুনবাগিচায় নিজ কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বাছাই করেন। বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ায় পরে অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন।
ঢাকা মহানগরীর ১৫টি আসনে মোট ২১৩টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ১৬১টি মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষিত হয়েছে। বাকি ৫২টি মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আর ঢাকা জেলার পাঁচটি আসনে ৫২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে ৩৩ জনের বৈধতা এসেছে। মনোনয়নপত্র ঠিক থাকা প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের নিয়ে যেমন আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, উল্টো দিকে বাতিল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যরা।
ঢাকা-৯ : ঢাকা-৯ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সংখ্যা ১০টি, যার মধ্যে বাতিল হয়েছে ২টি, স্থগিত একটি। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন চৌধুরী, বিএনপির হাবিবুর রশিদ, ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ মানিক মিয়া, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মাহফুজা আক্তার, জাকের পার্টির মো. হুমায়ুন কবীর, বিএনএফের মো. শফিউল্লাহ চৌধুরী।
ঢাকা-৮ : মনোনয়নপত্র দাখিলের সংখ্যা ২২টি। বাতিল হয়েছে ৭টি, স্থগিত একটি। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জেএসডির এমএ ইউসুফ, বিএনএফের আব্দুস সামাদ সুজন, বাসদের শম্পা বসু, এনপিপির মো. ছাবের আহম্মদ (কাজী ছাব্বির), জাতীয় পার্টির আরিফুর রহমান, পিডিপির আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মুসলীম লীগের হাসিনা হোসেন, গণফ্রন্টের মো. জাকির হোসেন, বিএনপির মির্জা আব্বাস উদ্দীন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবুল কাশেম, জাকের পাটির মো. নজরুল ইসলাম লিটন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সুমি আক্তার শিল্পী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবু নোমান মোহাম্মদ জিয়াউল হক মজুমদার, জাতীয় পার্টির ইউনুস আলী আকন্দ ও মিনি খাঁন।
ঢাকা-৭ : এই আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সংখ্যা ১৯টি। বাতিল করা হয়েছে ৪টি। এখানে বৈধ প্রার্থীরা হলেন- এনপিপির মাসুদ পাশা, গণফোরামের মোশাররফ হোসেন, বাসদের খালেকুজ্জামান, জাতীয় পার্টির তারেক আহমেদ আদেল, জাকের পার্টির বিপ্লব চন্দ্র বনিক, গণফ্রন্টের মো. রিয়াজ উদ্দিন, আওয়ামী লীগের হাজী আবুল হাসনাত ও হাজী মো. সেলিম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের হাবিবুল্লাহ, বিএনএফের জাহাঙ্গীর হোসেন, মুসলিম লীগের আকতার হোসেন মোল্লা, স্বতন্ত্র মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, বিএনপির মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, গণফোরামের মোস্তফা মোহসিন মন্টু।
ঢাকা-৬ : এ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয় ১৩টি, বাতিল হয় ৩টি। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- এনপিপির আকতার হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের মানোয়ার খান, সিপিবির আবু তাহের হোসেন, গণফ্রন্টের আহম্মেদ আলী শেখ, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, স্বতন্ত্র সৈয়দ নাজমুল হুদা, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ববি হাজ্জাজ, বিএনপির কাজী আবুল বাশার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের কাজী সালমা সুলতানা।
ঢাকা-৫ : এ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয় ১৩টি। বাছাইয়ে বাতিল হয় ২টি। এখানে বৈধ প্রার্থীরা হলেন- এনপিপির আরিফুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের মো. আলতাফ হোসেন, আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান মোল্লা ও কাজী মাইনুল ইসলাম মনু, জাকের পার্টির মো. রবিউল ইসলাম, গণফোরামের এসএম আলতাফ হোসেন, গণফ্রন্টের শামীম মিয়া, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মো. আবদুর রশিদ ওরফে আবদুর রশিদ সরকার, বিএনপির নবীউল্লা নবী, ইসলামী ঐক্যজোটের আব্দুল কাইয়ুম, জাতীয় পার্টির মো. মীর আব্দুস সবুর।
ঢাকা-৪ : এই আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সংখ্যা ১৫টি। বাতিল হয়েছে ৬টি। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ্, ইসলামী ঐক্যজোটের শাহ আলম, গণফ্রন্টের সহিদুল ইসলাম মোল্যা, জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, বিএনপির সালাহউদ্দন আহমেদ ও তানভীর আহমেদ, এনপিপির সুমন কুমার রায়, জাসদের হাবিবুর রহমান, জাকের পার্টির আজাদ মাহমুদ।
ঢাকা-৩ : এ আসনে আবেদন পড়েছিল আটটি। গৃহীত হয়েছে পাঁচটি আর বাতিল হয়েছে তিনটি। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- বাসদের মুজিবুর রহমান হাওলাদার, বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আওয়ামী লীগের নসরুল হামিদ বিপু, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান লিটন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী রেজা।
ঢাকা-২ : এ আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছয়টি গৃহীত ও চারটি বাতিল হয়েছে। বিচারিক আদালতে দণ্ডিত হওয়ায় বিএনপির প্রার্থী আমানউল্লাহ আমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মারুফ খান, ট্যাপ রিটার্ন দাখিল না করায় সিপিবি প্রার্থী সুকান্ত সফি চৌধুরী এবং প্রস্তাবক ও সমর্থক সংশ্নিষ্ট আসনের ভোটার না হওয়ায় বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সৈয়দ মঈনুদ্দিন রিপনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এই আসনে বৈধ প্রার্থী আওয়ামী লীগের খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, বিএনপির ইরফান ইবনে আমান (আমানউল্লাহ আমানের ছেলে), গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জহিরুল ইসলাম, খেলাফতে মজলিশের আতাউল্লাহ ও জাতীয় পার্টির শাকিল আহমেদ শাকিল।
ঢাকা-১ : এ আসনে ১২টি মনোনয়নপত্র জমা হয়। এর মধ্যে সাতটি গৃহীত ও পাঁচটি বাতিল হয়েছে। বৈধ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে আওয়ামী লীগের সালমান ফজলুর রহমান ও জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য সালমা ইসলামের। তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া কামাল হোসেন, করম আলী, জালাল উদ্দিন, আবিদ হোসেন ও সেকান্দার হোসেনের মনোয়নপত্র বৈধ হয়েছে। তবে প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে বিএনপি।