মোঃশাহাগির মৃধা : অাসন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অালোচনা সমালোচনাই শেষ নই। নতুন করে অাবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তজাতিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানাকে প্রতিহত করা হবে বলে সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ আনোয়ার হোসেন মাস্টার সাংবাদিকদেরকে জানান, নির্বাচনী এলাকায় ভোটার তালিকায় তার নাম নেই, নিজের ভোট অন্য প্রার্থীকে দিতে হবে, কখনোই এলাকায় আসেননি, তৃণমূলের কেউ চিনেন না এই লোক দলের নমিনেশন নিয়ে এসে এখান থেকে এমপি নির্বাচন করবেন, তা এখানকার তৃণমূল নেতৃবৃন্দ মেনে নিবে না। প্রয়োজনে তাকে এখানে যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে। ২৪নভেম্বর শনিবার এ প্রতিবেদককে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন মাস্টার এসব কথা বলেন। বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, আমি এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি বিগত এক’এগারো মঈন-ফকরুদ্দিন আমলে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক তারেক রহমানের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফাতর হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি ছিলাম। দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি, আশা করি সেই ত্যাগের মূল্যায়ন দল করবে। তবে রুমিন ফারহানাকে এখানে মেনে নেওয়া হবে না। দল এখানে তাকে মনোনয়ন দিলে, এখানকার দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাকে নির্বাচনী এলাকায় ঢুকতেই দিবে না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তজাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আজ শনিবার মুঠোফোনে বলেন, আমার নামে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক ২৫টি মামলা রয়েছে।
এ অবস্থায় আমি মামলার হাজিরাও দেয়, দলের জন্য কাজও করি এবং নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছি। সরাইলে দলীয়ভাবে আনোয়ার হোসেন মাস্টারের নামে কয়টি মামলা আছে। সে (আনোয়ার মাস্টার) ওইখানে বসে দলের ব্যাপারে কি ভূমিকা রেখেছে, তা সেখানকার নেতাকর্মীরা সবকিছুই জানেন। ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকার অনেকের সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছে। দলীয়ভাবে শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিদিনই সেখানকার নেতাকর্মীদের সাথে আমার আলাপচারিতা হচ্ছে।
রুমিন ফারহানা আক্ষেপ করে বলেন, আমার মা (বেগম খালেদা জিয়া) জেলে। আমার নেতা (তারেক জিয়া) লন্ডনে। বিএনপির নেতা কর্মীকে
মালমা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
বিএনপি এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমি মনে করি আমরা সকলেই এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা প্রয়োজন। দলের বৃহৎ স্বার্থে সকলেই ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। তিনি বলেন, আশা করি দলের প্রতি আমার ত্যাগ ও আমার ভূমিকা বিবেচনা করে দল আমাকে মনোনয়ন দিবে। মনোনয়ন পেলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এ অাসনটি বিজয়ী করে উপহার দেব।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামত গুরুত্ব দেয়া খুবই জরুরি। রুমিন ফারহানাকে এখানে কেউ তেমন চিনেন না, তাকে নেতাকর্মীরা মেনেও নিবেন না।
তিনি বলেন, এই আসনে মোট ভোটার প্রায় ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার। এরমধ্যে ২ লক্ষ ২১ হাজার ভোট সরাইল উপজেলায়। এখানে অন্তত ৮০ ভাগ ভোট বিএনপির। এটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সরাইলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা এখানে রুমিন ফারহানাকে চান না। আমি এই আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদিকে রাজনৈতিক মহলে এ আসনে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার প্রার্থীতা নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা অব্যাহত আছে।বিএনপির তৃণমূলের অনেক নেতারা জানান, বর্তমানে এ আসনটি মহাজোটের দখলে। এই আসন পুনরুদ্ধার করতে হলে তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া উচিত।তৃণমূলের প্রার্থী হলে ভালো হয়, জয়ের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি থাকে না। তারপরও কেন্দ্র যাকে মনোনয়ন দেন, যে ধানের শীষ নিয়ে আসবেন তাকেই আমরা নির্বাচিত করবো।