দর্পণ ডেস্ক : ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বুধবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। ছুটির দিনেও দম ফেলার ফুরসত ছিল না গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
ব্যস্ততার মাঝেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নজর ছিল বাঘের বেষ্টনীতে। কারণ সেখানে ছিল তিন মাস আগে জন্ম নেয়া তিন বাঘশাবক। কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারিতেই বড় হচ্ছে বাঘশাবকগুলো।
পার্কের সাফারি জোনে দ্বিতীয়বারের মতো একটি বাঘিনী গত ৮ আগস্ট তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। তিনটি শাবকের মধ্যে রয়েছে একটি বিরল প্রজাতির সাদা বাঘশাবক, যা বাংলাদেশে দ্বিতীয়বার জন্ম নিয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালে তিনটি শাবকের জন্ম দিয়েছিল এই বাঘিনী। সবমিলে সাফারি পার্কে এখন মোট বাঘের সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে চারটি বাঘ ও আটটি বাঘিনী। তবে সাফারি পার্কে সাদা বাঘের জন্ম এটিই প্রথম।
এসব বাঘের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন নুরুন্নবী মিন্টু। তিনি বলেন, বাঘ শাবকগুলো মায়ের সঙ্গে সারাদিন ব্যস্ত থাকে খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে। বেষ্টনীজুড়ে মায়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় শাবকগুলো। বাঘিনী তার শাবকদের কখনো চোখের আড়াল হতে দেয় না। চোখের আড়াল হলে শাবকগুলো খুঁজতে থাকে মা বাঘিনী। না পেলে অস্থির হয়ে ছোটাছুটি করে। শাবকগুলোকে যখন কাছে পায় তখন শান্ত হয়ে যায়। বাঘিনীর চিন্তা শাবকগুলোকে নিয়ে। কারণ শাবক নিয়ে কাউকে বিশ্বাস করে না বাঘিনী; অচেনা কাউকে দেখলেই রেগে যায় মা।
নুরুন্নবী মিন্টু আরও বলেন, বাঘ শাবকগুলো নিয়ে বাঘ বেষ্টনীর পর্যবেক্ষকসহ পার্কের সব কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। শাবকগুলোর বয়স আড়াই বছর হলে দর্শনার্থীদের জন্য সাফারি জোন উন্মুক্ত করা হবে।
পার্কের বন্যপ্রাণি পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, গত ৮ আগস্ট একটি মা বাঘিনী তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। এর মধ্যে রয়েছে একটি সাদা প্রজাতির বাঘ। জন্মের পর থেকে মা ও শাবকরা সুস্থ রয়েছে। তারা নিয়মিত মায়ের দুধ পান করছে। শাবকদের দুধ পানের কথা বিবেচনা করে মা বাঘিনীকে অতিরিক্ত খাবার দেয়া হচ্ছে। এখন শাবকদেরও খাবার দেয়া হচ্ছে। আবার মায়ের কাছ থেকে যে পরিমাণ খাবার পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে কিনা? পেলেও শাবকদের চাহিদা মোতাবেক হলো কিনা তা দেখা হচ্ছে। পালাক্রমে কাউকে না কাউকে বাঘ বেষ্টনী দেখাশোনার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের নিবিড় পর্যবেক্ষণে পার্কে বিভিন্ন প্রাণিদের নিয়মিত বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে। বাঘ শাবকগুলো সবার নজরদারিতে রয়েছে। আশা করছি বাঘ থেকে ভবিষ্যতে আরও শাবক পাওয়া যাবে। আমরা ভালোভাবে শাবকগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করছি।