দর্পণ ডেস্ক : ‘কালো অধ্যায়’ হয়ে থাকবে জার্মানির ফুটবল ইতিহাসে ২০১৮ সাল। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বিদায়ের পর ইউয়েফা নেশন্স লীগের দ্বিতীয় স্তরে অবনমনের লজ্জায় পড়ে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। জার্মানির এই করুণ দশার জন্য দায়ী কে? কোচ জোয়াকিম লো নন! এর জন্য পেপ গার্দিওলাকে কাঠগড়ায় তোলেন জার্মানির সাবেক ফুটবলার হ্যান্স পিটার ব্রিগেল। তার বিশ্বাস, জোয়াকিম লোর দলের বর্তমান সংকটের পেছনে সাবেক বায়ার্ন মিউনিখ কোচ গার্দিওলার ফুটবল দর্শনই দায়ী।

বার্সেলোনা অধ্যায় (২০০৮-১২) শেষে বায়ার্নে তিন মৌসুম কাটিয়ে ২০১৬ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেন এই স্প্যানিয়ার্ড কোচ। দ্রুতগতির প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলায় অভ্যস্ত বায়ার্ন গার্দিওলার অধীনেই প্রথম শেখে কীভাবে বল নিজেদের দখলে রেখে ধীরে ধীরে আক্রমণে ওঠে গোল করতে হয়, কীভাবে ম্যাচের পুরোটা সময় পাসিং ফুটবল খেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে ম্যাচ জেতা যায়। এই দর্শনে খেলেই বায়ার্নকে টানা তিনবার বুন্দেসলীগা জেতানোর পাশাপাশি ইউয়েফা সুপার কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপ ও দুইবার জার্মান কাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন গার্দিওলা। তিনি বায়ার্নের কোচ থাকার সময়ই ২০১৪ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি।

তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১৯৮০ ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউরো) জয়ী ডিফেন্ডার ব্রিগেল বলেন, ‘খুবই স্বাভাবিক লক্ষ্য আমাদের মাথার বাইরে চলে গেছে যে, ফুটবলে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের চেয়ে ফলাফলই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা সম্পূর্ণ গার্দিওলার দোষ। তিনি বায়ার্নের কোচ হওয়ার পর থেকেই কিছু একটা বদলে গেছে। আমাদের ধোঁকা দিয়েছেন তিনি। তিনিই প্রথমে এসে শিখিয়ে গেছেন যে, ম্যাচ জিততে হলে ৭৫% বল দখলে রাখার কৌশলে থাকতে হবে।

কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাশিত ফলাফলের জন্য যথেষ্ট নয়। অন্তত সব সময়ের জন্য নয়। বিশ্বকাপ জিতে ফ্রান্স দেখিয়ে দিয়েছে, প্রতিপক্ষের কাছে বল ছেড়ে দিয়ে ৫০ শতাংশের নিচে বল নিয়ন্ত্রণ রেখেও ম্যাচ জেতা যায়।’ টানা পাঁচটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ জয়হীন (২ ড্র, ৩ হার) থেকে বিগত ৪০ বছরে সবচেয়ে দীর্ঘ জয়খরায় জার্মানি। সবশেষ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র দেখে লোর শিষ্যরা।