ফাইল ছবি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: বুধবার (২১ নভেম্বর) থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গাস্নান ও রাস পূর্ণিমার মেলা। এবছর মেলায় লক্ষাধিক লোকের সমাগাম হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলছেন আয়োজক সূত্র। রাসমেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে ভাসমান ব্যবসায়ীরা নানা রকমমের সামগ্রী নিয়ে ইতোমধ্যে পসার সাজাতে শুরু করেছে। ২২ নভেম্বর রাত নয়টায় রাস পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী।

এদিকে গঙ্গাস্নান ও রাসমেলাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক পস্তুতি নেয়া হয়েছে। শ্রী শ্রী রাধা কৃঞ্চ মন্দিরের সামনে প্যান্ডেল, গেট ও আলোকসজ্জার কাজ প্রায় শেষের পথে। মন্দিরে রাধা কৃঞ্চের ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা স্থাপণ করা
হয়েছে। আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় এ বছর নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপুর্ণ এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন সহ কুয়াকাটা নৌপুলিশ, মহিপুর থানা পুলিশ, কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও ডিবি পুলিশের টিম ও  র‌্যাব সদস্যরা পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন থাকবে। সমুদ্র পথে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সমুদ্রে নৌ টহল থাকবে। অন্যদিকে সৈকতের
গঙ্গামতি, লেম্বুরবন,রাখাইন মন্দিরসহ দর্শনীয় স্পটে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হবে। মেলায় থাকবে সে¦চ্ছাসেবক টিম। সড়ক পথেও থাকবে পুলিশের নজরদারী।

গঙ্গাস্নান ও রাস মেলাকে সফল করতে রাস পূজা এবং রাস মেলা উৎযাপনে আলাদা দু’টি কমিটি করা হয়েছে। রাস পূজা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সাংবাদিক কাজল বরণ দাস এবং রাস মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানভীর রহমানকে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক রাস পুজা ও রাস মেলা কমিটির সাথে বৈঠক করে আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পুণ্যার্থীদের সুপেয় পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, গঙ্গাস্নান শেষে কাপড় পাল্টানোর জন্য
অস্থায়ী গোসল খানা, নলকূপ বসানোসহ তিনদিন ব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া আগত পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল ক্যাম্প, তথ্য সেবাসহ নেয়া হয়েছে নানামুখী
পদক্ষেপ। আগত পুণ্যার্থীদের আলাদা কোন আবাসন ব্যবস্থা না থাকলেও কুয়াকাটায় অবস্থানরত আবাসিক হোটেল গুলোতে যাতে কম ভাড়ায় থাকতে পারে সেজন্য হোটেল মালিকদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে আগাম নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২১,২২ ও ২৩ নভেম্বর থেকে কুয়াকাটা টেলি যোগাযোগ ভবন থেকে শুরু করে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত এবং পৌর এলাকার মূল শহরের মধ্যে কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। সমুদ্র সৈকতেও যানবাহন চলাচল করার উপর থাকবে নিষেধাজ্ঞা।

শ্রী শ্রী রাধাকৃঞ্চ মন্দিরের পুরোহিত শিশির মহারাজ ব্রহ্মচারী জানান, ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় সন্ধ্যা আরতি, নাম কীর্তন, ভোগ প্রসাদের মধ্য দিয়ে শুরু হবে রাস পূজা। ২২ নভেম্বর ভোরে ভগবাত পাঠ, নাম কীর্তণ, সন্ধ্যায় সন্ধ্যা আরতি, উদ্বোধণী অনুষ্ঠান, ধর্মীয় আলোচনা, ক্লোজ আপ ওয়ান  শিল্পী লায়লা আকতার, প্রিয়াংকা বিশ্বাস ও ছোট নকুল শিল্পীদের পরিবেশনায় সংগীত অনুষ্ঠান ও রাতভর নাম কীর্তণ। ২৩ নভেম্বর সূর্যোদয়ের পর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা গঙ্গাস্নান করবেন। পুণ্যার্থীদের গঙ্গাস্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে তিনদিন ব্যাপী রাস পুর্ণিমার মেলা ও গঙ্গাস্নান।

রাসপুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরণ দাস বলেন, প্যান্ডেল ও আলোক সজ্জার কাজ প্রায় শেষের দিকে। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে