শেনজেনভুক্ত এলাকায় ১৮ সৌদি নাগরিকের ওপর প্রবেশের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত নাগরিকের ওপর জার্মানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস সোমবার এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে কাতারের সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা।

উল্লেখ্য, ইউরোপের শেনজেনভুক্ত ২৬টি দেশের সীমান্ত দিয়ে অবাধে যাতায়াত করা যায়।

মাস জানান, শেনজেনের অন্তর্ভুক্ত ফ্রান্স ও এর বাইরে থাকা ব্রিটেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে জার্মানি এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

তিনি বলেন, ‘এই মামলায় আগের মতোই যত প্রশ্ন আছে তত উত্তর নেই। এই অপরাধ ও এর জন্য দায়ী কারা সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে।’

নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১৮ জন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে জানলেও, এর বাইরে কোনও তথ্য দেননি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বার্লিনে তার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, জার্মানির ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সুরক্ষা আইনের কারণে এদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

জামাল খাসোগিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভিতর হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে সৌদি আরব।

গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগিকে হত্যা করে একদল সৌদি এজেন্ট। সৌদি আরব প্রথমে এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবে জড়িত নেই বলে দাবি করে। তবে আন্তর্জাতিক চাপের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর স্বীকার করে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে খাসোগিকে।

এরপর কয়েক বার সৌদি আরব বিবৃতি পাল্টেছে। প্রথমে ভুলক্রমে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করলেও, আন্তর্জাতিকমহল তা প্রত্যাখ্যান করে।

ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি তার আগের বিয়ের তালাকের কাগজপত্র আনতে গিয়েছিলেন। এ সময় কনস্যুলেটের বাইরে তার বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিজের কাছে নিজের ফোনটি রেখে যান। তিনি ফিরে না এলে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টাকে ফোন করার নির্দেশও হাতিসকে দিয়ে যান খাসোগি।

ওইদিন মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষার পর হাতিস তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেন।

এই ঘটনায় সৌদি আরবের পাঁচজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ১৮ জনকে।

সৌদির ঘাতক দল খাসোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করেছে এই বিষয়ে একমত তুরস্ক ও সৌদি আরব। কিন্তু এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত ছিল কিনা সে বিষয়ে তারা একমত নয়, জানায় কাতারের আলজাজিরা।

এদিকে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ নিশ্চিত করেছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

গত সপ্তাহে সৌদির এক প্রসিকিউটর জানান, এই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রিয়াদ।

ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর শালান আল-শালান আরও জানান, যুবরাজ সালমানকে এই হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়নি।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতি উদ্ধৃত করে কাতারের আলজাজিরা জানায়, মার্কিন সরকার ‘খাসোগি হত্যায় জড়িত সকলকে জবাবদিহি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’।