লায়ন শামীম আহমেদ, ভৈরব প্রতিনিধি : শান্তিনগরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সোমবার বেলা ৩টা দিকে উপজেলার আগানাগর ইউনিয়নের শান্তিনগর গ্রামের আল নূর বিদ্যা নিকেতন স্কুলের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ভোক্তভোগি পরিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরব থানায় আসে অভিযোগ দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এলেক্স আপন। সে আল নূর বিদ্যা নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। এঘটনায় এলাকাবাসী মঙ্গলবার বেলা ১০টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।
যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সহপাটি নাজমা জানান, সোমবার দুপুরে ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী স্কুলে অন্য শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় প্রধান শিক্ষক এলেক্স আপন ওই ছাত্রীর মায়ের বরাত দিয়ে বর্ষাকে তাঁর রুমে ডেকে নিয়ে আসে। আসার পর দরজা আটকিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এসময় বর্ষার আসতে দেরি দেখে সহপাটি নাজমা বেগম এসে প্রধান শিক্ষকের রুমের দরজা বন্ধ দেখতে পায়।
তখন বর্ষার চিৎকার শুনে দরজায় ধাক্কা দিলে শিক্ষক দরজা খুলে। বর্ষা তখন কান্নারত অবস্থায় ওই শিক্ষক দরজা বন্ধ করে যেসব কর্মকান্ড করেছে সবকিছু নাজমাকে খুলে বলে।তখন ওই শিক্ষক ঘটানটি কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে দেয়। তখন নাজমা বর্ষাকে তাঁর পিতা মাতার কাছে নিয়ে যায়। বর্ষার কাছ থেকে সব শুনে সন্ধ্যায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক বিচারের দাবিতে বাবা আসাদ মিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন এবং গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দেয়।
স্থানীয়রা জানান, এলেক্স আপন দীর্ঘদিন যাবত নিজের বাড়ির কয়েকটি কক্ষে আল নূর বিদ্যা নিকেতন নামে একটি স্কুল খুলে পাঠদানের নামে বিভিন্ন সময় ওই স্কুলের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসতেন। এমন একাধিক ঘটনায় শিক্ষক এলেক্স আপনের বিরুদ্ধে এলাকায় শালিস দরবার হয়। অনেক কোমলমতি ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হলেও লাজ লজ্জার ভয়ে অনেকে মুখ খুলেননি। অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী তাহমিনা জানান, তাঁর স্বামী ঘটনার সময় শিক্ষার্থী বর্ষাকে রুমে নিয়ে তার পরিহিত জামা ঠিক করে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার কিছু লোক তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ঘটনায় স্কুলে গিয়ে অভিযুক্ত এলেক্স আপনকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় ভোক্তভোগির পরিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দাখিলের খবর পেয়ে বর্ষার মামা লিয়াকত আলীর কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাই এবং যেভাবেই হোক ঘটনাটি মিমাংসা করার প্রস্তাব দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের ওই মুঠোফোনের রেকর্ড লিয়াকত আলীর কাছ সাংবাদিকরা সংগ্রহ করেন। ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মোখলেছুর রহমান বলেন, আগানগর ইউনিয়নের শান্তিনগরে একটি স্কুলে যৌন হয়রানির ঘটনার কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। অভিযোগ আসলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। উক্ত ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো এবং পুর্ব পরিকল্পীত ভাবে এলাকার কিছু সংখ্যক লোকজন ঐ স্কুলটি ভাংচুর করেছে বলে জানান আল নুর বিদ্যানিকেতন এর প্রতিষ্ঠাতা এলেক্স আপন এর স্ত্রী শিক্ষিকা তাহমিনা।