দর্পণ ডেস্ক : লেখা পড়ার বয়স নাই, চলো সবাই স্কুলে যাই’ শিক্ষাগ্রহণের এ শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে ৪১ বছর বয়সে এসএসসি ভোকেশনাল (৯ম শেণিতে) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন গাইবান্ধার রুমা নামে এক নারী।
তিনি পলাশবাড়ী উপজেলার গৃধারীপুর গ্রামের মৃত্যু শাহাজাদার স্ত্রী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সাদুল্লাপুর ইদিলপুর শ্যামলের বাজার মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ধাপের হাট বি এম কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন এ নারী।
পরীক্ষার্থী রুমা খাতুন বলেন, চাকরির জন্য অন্তত একটি সার্টিফিকেট দরকার। আগে থেকে যদি পড়ালেখা করতাম তাহলে আজ অভাব-অনটনে সংসার চালাতে হতো না। এখন বুঝতে পেরে পড়াশুনা শুরু করেছি। একজন নারী হয়ে এ বয়সে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে চাই। আমার যদি সার্টিফিকেট থাকত তাহলে আজ সংসার জীবনে ছেলে-মেয়ে নিয়ে এত কষ্টে থাকতে হতো না।
রুমা খাতুনের এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে ধাপেরহাট বি এল কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত, মেয়ে পলাশবাড়ী শিশু কাননে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
কারিগরি শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তি জীবনে স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলেই পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন রুমা।
রুমার ভাষ্য, যখন তিনি বুঝতে পেরেছেন, চতুর্থ শ্রেণির একটি চাকরির আবেদন করতে হলেও অন্তত অষ্টম শ্রেণির একটি সনদপত্র দরকার হয়। তাই তিনি ইদিলপুর শ্যামলের বাজার মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভর্তি হয়ে নিয়মিত পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শ্যামলের বাজার মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মো. রওশন জামিল বলেন, বয়স হলেও পড়ালেখা কোনো হাস্যকর ব্যাপার নয়; এই মূল মন্ত্র ধারণ করে তিনি ইদিলপুর শ্যামলের বাজার মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে অ্যাগ্রোবেসড ফুড বিষয়ে ভর্তি হয়ে চলমান এসএসসি ভোকেশনাল (৯ম শেণিতে) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে সাদুল্লাপুর সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. শামছুজ্জামানের নজরে পড়েন রুমা খাতুন।
শিক্ষা অফিসার মো. শামছুজ্জামান বলেন, লেখাপড়ায় কোনো বয়স নাই। যে কোনো বয়সে লেখাপড়া করা যায়। তার অনন্য উদাহরণ পরীক্ষার্থী রুমা খাতুন। জ্ঞান অর্জনে বয়সের চেয়ে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে রুমা লেখাপড়া বর্তমান সমাজ ও দেশের জন্য একটি উদাহরণ।