গ্রামটি দেখতেও খুবই সুন্দর।পাহাড়ি এই গ্রামে এমন অসংখ্য ভবন আছে যেগুলোতে ভূগর্ভস্থ ঘরও আছে। এই গ্রামের কয়েকটি ভবনে চারটি পর্যন্ত তলা আছে।
কিন্তু কেউ এই গ্রামে যেতে সাহস পান না। কারণ এর আরেক নাম মৃতদের শহর।
গ্রামের বাসিন্দারা সবাই মৃত! তার থেকেও বড় কথা যখন শুনবেন এই গ্রামে কেউ গেলে আর জীবিত ফেরত আসে না! রূপকথার গল্প নয়, এটি সত্য ঘটনা।
রাশিয়ায় এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখান থেকে কেউ জীবিত ফিরে আসে না। বিজ্ঞানীরাও এই রহস্য সমাধানে অনেক গবেষণা করেছেন। সেখানকার লোকজন গ্রামটিকে (The City of The Dead) মৃতদের শহর বলে ডাকে।
যেখানে শুধু মৃতদেহরাই বাস করে। স্থানীয় মানুষ ওই গ্রামের ঘরগুলোতে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের মৃতদেহগুলো রেখে আসেন।
এই গ্রামটি রাশিয়ার উত্তর ওশেটিয়ার একটি নির্জন এলাকায় অবস্থিত। গ্রামটির নাম ডারগাভস। গ্রামটিকে ঘিরে রয়েছে পাঁচটি খাড়া পাহাড়। আর গ্রামের ঘরগুলো সব পাহাড়ি পাথরে তৈরি করা হয়েছে।
এটি আসলে বিশাল এক গোরস্থান। এই ভবনগুলোর প্রতিটি তলায় মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়। গ্রামটিতে প্রায় ৯৯টি ভবন আছে। আজ থেকে প্রায় পাঁচ’শ বছর আগে সেই ১৬ শতক থেকেই এই ভবনগুলোতে মৃতদেহ করব দেওয়া হতো।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, যারা একা একা এই ভবনে যায় তারা আর কখনো জীবিত ফিরে আসে না। আর এ কারণেই এই গ্রামে কখনো কোনো পর্যটকও যাননি। এছাড়া পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে এখানকার আবহাওয়া ক্ষণেক্ষণেই বদলে যায়, যা ভ্রমণকারীদের জন্য উপযোগী নয়।
স্থানীয়দের মধ্যে একটি অদ্ভুত বিশ্বাস প্রচলিত আছে। তাদের বিশ্বাস ১৮’শ শতকে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের গুরুতর অসুস্থ আত্মীয়দেরকে এই গ্রামের ভবনগুলোতে রেখে আসতেন। তাদেরকে সময়ে সময়ে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হতো। কিন্তু মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখান থেকে বের হতে পারতেন না।
প্রত্মতাত্ত্বিকদের মতে, মৃতদেরকে সেখানে নৌকাকৃতির কফিনে ভরে কবর দেওয়া হতো। এই বিশ্বাস থেকেই এমনটা করা হতো যে, এতে মৃতদের জন্য স্বর্গে যাওয়া সহজ হবে। নৌকাকৃতির কফিন তাদেরকে স্বর্গে পৌঁছে দেবে।
গবেষকরা প্রতিটি ভূগর্ভস্থ স্থানের সামনে একটি করে কুয়ো দেখতে পেয়েছেন। মৃতদের কবর দেওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজনরা ওই কুয়োয় কয়েন ফেলত। কোনো কয়েন যদি অন্য একটি কয়েনের সঙ্গে লেগে উচ্চ আওয়াজ তৈরি করত তাহলে গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করত মৃত ব্যক্তি স্বর্গে যাবেন!