লিটন হোসেন লিমন, নাটোর প্রতিনিধি :
রাজশাহীতে নাটোরের এক শ্রমিককে মারধর করার প্রতিবাদে হঠাৎ করেই নাটোর থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নাটোর জেলা পরিবহন পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন এর স্বাক্ষরিত এক চিঠির বরাত দিয়ে বুধবার রাত ১০টায় শহরে মাইকিং করে পরিবহণ শ্রমিকের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহণ ধর্মঘট আহবান করা হয়। একই সময় শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নাটোর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির কাছে পৃথক একটি চিঠি দিয়ে পরিবহণ ঘর্মঘটের কথা জানিয়ে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তরের জেলা নাটোর থেকে কোন বাস ছেড়ে যায়নি এবং প্রবেশ করতেও পারেনি। হঠাৎ করে শ্রমিক ধর্মঘটের কারনে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। শ্রমিক নির্যাতনের প্রতিবাদে এই কর্মসূচী অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। তারা জানান, নাটোর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাথে রাজশাহী মালিক সমিতির বিরোধ এবং নাটোরের এক শ্রমিককে মারপিটের ঘটনায় সকাল থেকে সকল রুটের বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে নাটোর থেকে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরী প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ ছোট ছোট যানবাহনে গন্তব্য স্থানে যাচ্ছেন। এদিকে ধর্মঘটের কারণ নিয়ে ধুয়াশায় রয়েছেন বাস সংশ্লিষ্টরা। বাস মালিক এবং শ্রমিকদের বেশীর ভাগই ধর্ম ঘটের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন নাটোর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল রহমান সাগর। তিনি বলেন, মালিক সমিতি কোন পরিবহণ ধর্মঘট ডাকে নাই, ডেকেছে পরিবহণ শ্রিিমক ইউনিয়ন তাই ধর্মঘট বন্ধ করার দায়িত্ব শ্রমিকদেরই। নাটোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্য নির্বাহী সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, বিরোধটি মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। এব্যাপারে নাটোর পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনকে প্রশ্ন করলে রাজশীতে কবে, কখন কোন শ্রমিককে কারা মারধর করেছে তার সদুত্তর দিতে পারেননি। এব্যাপারে নাটোর সদও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের ব্যাপারে রাতে তিনি মাইকিং শুনেছেন তবে দাপ্তরিকভাবে তাকে কেউ জানায়নি। নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত জানান, তিনিও পরিবহন ধর্মঘটের কথা শুনেছেন তবে কে বা কারা কেন ডেকেছেন তিনি তা জানেন না। এ ব্যপারে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ড. রাজ্জাকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খোজ খবর নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে। নাটোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলাম বাচ্চু বলেছেন, শুক্রবার রাজশাহীতে ঐক্যফন্টের সমাবেশে লোকজন যেন যেতে না পারে সেজন্যই সরকারি দলের পক্ষ থেকে হঠাৎ এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। দ্রুত এর সমাধান করে বাস চলাচল স্বাভাবিক করার দাবী জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তিও মৌখিক পরীক্ষা, শুক্রবার ঢাকায় ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা ও শনিবার ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় উত্তরবঙ্গের পরীক্ষার্থীরা এই ধর্মঘটে মহা বিপাকে পড়েছেন।