মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচনে আট বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো কংগ্রেসের নিম্নকেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ নিলো ডেমোক্র্যাটরা। ফলে তারা এবার ট্রাম্পের সভায় হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাবে। ডেমোক্রেটদের এই জয়ের স্পটলাইটে ছিলেন নারী প্রার্থীরা। তবে মোট আসন সংখ্যার কোনো হিসাব উল্লেখ করা হয়নি।তবে মার্কিন সিনেটের নিয়ন্ত্রণে আছে ট্রাম্পের রিপাবলিকানরা।
ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেশনাল ক্যাম্পেইন কমিটির সাবেক পলিটিক্যাল ডিরেক্টর আয়ান রাসেল বলেন, প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের এই স্বল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতার অর্থ হচ্ছে, যেকোনো আইন প্রণয়নে এখানে বৃহত্তর সমঝোতার প্রয়োজন হবে। এতে করে উভয় দলের মধ্যপন্থীদের ক্ষমতায়ন হবে।
মঙ্গলাবার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় সময় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। তবে তারও আগে অনেকে ভোট দিয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সংখ্যাটা তিন কোটি ৪৩ লাখ, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫ আসনের সবকটিতেই ভোটযুদ্ধ হয়েছে। উচ্চকক্ষ সিনেটে আসন ১০০টি; ভোট হয়েছে ৩৫টিতে। এ ছাড়া ৩৬টি রাজ্যের গভর্নর পদেও লড়াই হয়েছে।
এ নির্বাচনকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বের ভাগ্য পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রিপাবলিকান পার্টি হারলে ক্ষমতাসীন প্রশাসন ‘বস্তুত পঙ্গু’ হয়ে যাবে। আর ডেমোক্র্যাটরা হারলে রাজনৈতিক অস্তিত্বহীনতার সংকটেই পড়ে যাবে বিরোধী শিবির।
নিম্নকক্ষে চালকের আসনে বসতে হলে ৪৩৫ আসনের মধ্যে ২১৮টিতে জয় পেতে হবে। ভোটের আগে নিম্নকক্ষে ২৩৬ আসন ছিল রিপাবলিকানদের হাতে। আর ডেমোক্র্যাটদের ছিল ১৯৩ আসন। মানে আগের আসন ধরে রেখে মাত্র ২৫টি আসন বেশি পেলে নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ পাবে বিরোধী দল।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও মানছেন, ডেমোক্র্যাটরা নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। আর এমনটা হলে তার আশঙ্কা, ‘বিরোধীরা আমেরিকার উন্নয়নের ধারা উল্টে দেবে।’
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো এবারের নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্প বলেছেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। অবৈধ অভিবাসীরা অবাধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ পাবে। আমাদের যাবতীয় অর্জন ঝুঁকির মুখে পড়বে।’
এ নির্বাচনে চীন, রাশিয়াসহ বিদেশি শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের আশঙ্কা ছিল। এমনকি ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে জনমতকে প্রভাবিত করার আশঙ্কাও ছিল। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সতর্ক অবস্থান নিয়েছিল।
এদিকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ভোটের আগের রাতে একশর বেশি অ্যাকাউন্ট মুছে দিয়েছে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে নির্বাচনকে ঘিরে তথ্য বিকৃতির অপচেষ্টা চলছিল বলে জানায় তারা। ফেসবুকের বিবৃতি অনুযায়ী, এসব অ্যাকাউন্ট ফরাসি, ইংরেজি ও রুশ ভাষায় ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছিল।