দর্পণ ডেস্ক :ধামরাইয়ে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও এক ছাত্র মাথার লম্বা চুল না কাটায় শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের ভেতর কাচি দিয়ে তার মাথার লম্বা চুল কেটে দিয়েছেন।
ছাত্রের পরিবারের লোকজন জানতে পেরে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।

এ সময় এলাকাবাসী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে ওই শিক্ষকসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পান।

এদিকে এ ঘটনায় উল্টো হামলাকারীরা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, ৬ মাস ধরে জলশীন এলাকেশী উচ্চবিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক মো. সাদ্দাম হোসেন সপ্তম শ্রেণির ৭৩ জন ছাত্রকে মাথার লম্বা চুল ছোট করতে বলেন।

শিক্ষকের পকেটের টাকা দিয়ে পর্যায়ক্রমে ৭১ জন ছাত্র মাথার লম্বা চুল কাটলেও মো. আবির হোসেন ও সাজ্জাদ হোসেন নামে দুই ছাত্র চুল কাটেনি। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ওই শ্রেণিশিক্ষক আবির ও সাজ্জাদকে টাকা দিয়ে চুল কাটতে বলেন।

আবির হোসেন চুল কাটতে রাজি হলেও সাজ্জাদ হোসেন চুল কাটতে রাজি না হয়ে উল্টো শিক্ষকের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সাজ্জাদের মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দিয়ে সেলুন থেকে পূর্ণাঙ্গ চুল কাটার নির্দেশ দেন শিক্ষক সাদ্দাম।

বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওই স্কুলছাত্রের মামা মো. আবেদ আলীর নেতৃত্বে লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও অর্ধশতাধিক লোকজন নিয়ে অতর্কিত হামলা করে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অবস্থার বেগতিক বুঝতে পেরে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দেন শিক্ষকরা।

এ সময় ক্ষুব্ধ লোকজন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা-জানালায় লাঠিসোঁটা দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করতে থাকে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের রক্ষায় এগিয়ে আসে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মধ্যে হামলাকারীরা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পিছু হটলেও তারা ওই খণ্ডকালীন শিক্ষক মো. সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়।

শিক্ষককে না পেয়ে বাড়িঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরে হামলার নেতৃত্বদানকারী মো. আবেদ আলী উল্টো শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে খণ্ডকালীন শিক্ষক মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, ৬ মাস তাগিদ দেয়ার পরও দুজন ছাত্র তাদের লম্বা চুল ছোট না করলে তাদেরকে ওইদিন চুল কাটার জন্য বলা হয়। এজন্য তাদেরকে টাকাও দেয়া হয়। আবির নামে একজন ছাত্র চুল কাটলেও সাজ্জাদ হোসেন চুল না কেটে উল্টো তর্কবিতর্কে জড়ায়।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ মো. হান্নান ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, শ্রেণিকক্ষে সব ছাত্রছাত্রীর সামনে একজন ছাত্রের এভাবে চুল কেটে দেয়া মানবাধিকারের মারাত্মক লংঘন। তাই অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চলে আসেন।