ঝালকাঠি প্রতিনিধি : রাজাপুর ও কাঁঠালিয়াকে সমন্বিত করে ১৯৭৮ সালে সংসদীয় আসন ১২৫ পুনঃবিন্যস্ত হয়ে গঠিত হয় ঝালকাঠি-১ আসন। স্বাধীনতা পূর্ব ও উত্তর সবসময়ই অত্র আসনটিতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন জাতীয় রাজনীতিতে তারকা হিসেবে পরিচিত রাজনীতিবিদগণ। ১৯৭৯ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) শাহজাহান ওমর সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর উজ্জল ভাবমূর্তিকে কাজে লাগিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮’র জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির অত্র এলাকায় সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ৯০-র গণঅভ্যুত্থানের পর ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া’র জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আবারও বিএনপি এই আসনটি ফেরত আনে। শাহজাহান ওমরকে দল মনোয়ন দান করে । কিন্তু ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জয়লাভ করেন এ আসনটিতে। ২০০১ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে, বিএনপির গণজোয়ারে জনাব শাহজাহান ওমর আবারও নির্বাচিত হন। বিএনপি তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দান করে।
২০০৮ সালের মে মাসে ঘরোয়া রাজনীতি উন্মুক্ত হবার পর ঝালকাঠি-১ আসনের জাতীয়তাবাদী সরকারের লোকজন নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে। কারন, ১৯৭৯ সাল হতে শাহজাহান ওমর বিএনপির নেতৃত্ব অত্র এলাকায় প্রতিষ্ঠিত না হতে দেয়ার অভিযোগ এখন প্রবাদ স্বরূপ। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন শুধু নিজেকে, বিকশিত হতে দেখা গেছে তার ধনসম্পদ।
১/১১-র সেই দুঃসময়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর সাবেক নেতা, অত্র এলাকার সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান, বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব রফিকুল ইসলাম জামাল দলের কান্ডারী হিসেবে আর্বিভূত হন। জিয়া পরিবারের কঠিন সেই সময়ে তিনি কাছাকাছি থেকেছেন, সাথে এলাকার দলীয় কর্মকান্ড ও এগিয়ে নিয়েছেন। প্রথমবারের মতো অত্র আসনে ব্যক্তি কেন্দ্রিকতার বাইরে গিয়ে সুস্থ ধারার রাজনীতি চালু করেছিলেন দলের ভেতরে ও বাইরে। এলাকার মানুষ ও মুখিয়ে ছিলেন এরকম একজন ভালো নেতৃত্বের জন্য। এলাকায় ব্যাপক সমাদৃত হতে থাকেন তিনি। ১
৯৯৬ হতে ২০০১ পর্যন্ত বিরোধী দলের কর্মকান্ডে এবং তৎপরবর্তীতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকার দলীয় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডেই এলাকায় ছিল তার সরব উপস্থিত। ১/১১ র দুর্দিনে দলও জিয়া পরিবারের প্রতি তার আনুগত্য, তার পেছনের রাজনৈতিক কার্যাবলী নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তাকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেন। তার সমর্থকগোষ্ঠী এমনকি বিরোধিতাকারীরা এখনও মনে করেন, তিনিই নিরঙ্কুশ বিজয়ী হতেন। কারণ বিজয়ী সরকার দলীয় প্রার্থী ও তার প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ছিল যৎসামান্য। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা সারাদেশে নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার জনাব রফিকুল ইসলাম জামাল এলাকায় তৃণমূল নেতাকর্মী ও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে এই দুঃসময়েও নিয়মিত যোগাযোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা করে চলছেন। তিনি মনে করেন, যদি দল তাকে মনোনয়ন দেয় এবং সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে তবে অত্র ঝালকাঠি-১ আসনটি তিনি আবার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন। তিনি জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধাচারণ করা কাউকেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ভাবতে ইচ্ছুক নন।