দর্পণ ডেস্ক : নাগেশ্বরীর কচাকাটায় ডোবা থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নবজাতকটির মা ১৩ বছর বয়সের এক কিশোরী। অভিযোগ উঠেছে, সে মা হয়েছে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ধর্ষণের ফলে।

এ ঘটনায় ক্লিনিক মালিকসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ধর্ষক পলাতক থাকলেও তার লোকজনের হুমকিতে ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে অসুস্থ কিশোরীসহ তার পরিবার।

ওই কিশোরীর বাবা-মা দুজনই ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন। দাদির কাছে থেকে পড়ালেখা করে সে।

প্রতিবেশী ছাত্তার আলীর ছেলে বলদিয়া হায়দাড়িয়া মাদ্রাসার কৃষি বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম লাভলুর বাড়িতে মাঝে মধ্যে কাজ করত মেয়েটি। প্রায় সাত মাস আগে ফাঁকা বাড়িতে লাভলু তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করে ওই মেয়েটি। এ কথা কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় লাভলু। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং তার দাদিকে জানায়। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোড় করে গর্ভপাত করায় লাভলু। ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেয়ের ফুপাকে দিয়ে কচাকাটার জননী ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের মালিক পল্লী চিকিৎসক শহিদুল ইসলামের বাড়িতে করা হয় গর্ভপাত।

এ সময় মেয়েটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয় এবং নবজাতকের লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেয়া হয়। এরপরই গর্ভপাতের চুক্তির চার হাজার টাকা ক্লিনিক মালিক শহিদুল ইসলামকে দিতে এলে স্থানীয় উত্তেজিত জনতার হাতে আটক হয় মেয়ের ফুফা।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েটি। সে জানায়, পড়ালেখার খরচের জন্য লাভলু মাস্টারের বাড়িতে কাজ করত সে। স্ত্রীর অবর্তমানে তাকে ধর্ষণ করে লাভলু। এ কথা কাউকে বললে মেরে ফেলার ভয় দেখায় সে। এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক শিক্ষক লাভলু।

মাদ্রাসার সুপার মতিয়ার রহমান জানান, ঘটনা জানাজানির পর থেকে লাভলু মাদ্রাসায় আসে না। তিন দিনের ছুটির আবেদন দিয়ে সে নিরুদ্দেশ।

মেয়েটির বাবা বলেন, এ ঘটনায় মামলা করতে চাচ্ছি। অনেকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কচাকাটা থানার ওসি ফারুক খলিল জানান, নবজাতকের লাশ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে। আটকদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।