দর্পণ ডেস্ক : আগের দিন অনুশীলনে ছিলেন না বাংলাদেশ দলের হেড কোচ জেমি ডে। তিনি যখন হাসপাতালে, তার শিষ্যরা তখন গা গরম করছেন কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন স্টেডিয়ামে। তবে সেমিফাইনালের আগের দিন তাকে আর হাসপাতালে রাখা গেল না। ডাক্তারের আপত্তি সত্ত্বেও জেমি ছুটে আসেন বিজিবি মাঠে বাংলাদেশের অনুশীলনে। আজ বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ আসরে কক্সবাজার স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
গ্রুপ পর্বে লাওসকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ করেছে বাংলাদেশ। এবার সেমিফাইনালে ফিলিস্তিনকে হারিয়ে বাড়তি প্রাপ্তি যোগ করতে চান বাংলাদেশের কোচ। সেজন্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারকে বেছে নিতে চাইছেন জেমি ডে।
তিনবারের সাক্ষাতে দুই হার দেখা শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিনকে হারাতেও প্রস্তুত তার শিষ্যরা। তবে ফিলিস্তিনকে হারাতে গোলের প্রয়োজন। যে গোলের অভাবেই গ্রুপ পর্বে ফিলিপাইনকে বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের পক্ষে গোল করতে পারবেন তো জীবন-সুফিলরা। গতকাল টিম হোটেল কক্সটুডেতে এমন প্রশ্নের জবাবে জেমি ডে বলেন, আমরা জানি ম্যাচটি আমাদের জন্য বেশ কঠিন হবে। তবে শেষ দুই ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। এর আগের ম্যাচেও ছেলেরা ভালো করেছে। আবারো আমাদের ভালো ম্যাচ খেলতে হবে। প্রাপ্ত সুযোগের সঠিক ব্যবহার করতে হবে; ফিলিপাইন ম্যাচের উদাহারণ টেনে জেমি বলেন, শেষ ম্যাচে আমরা ফিলিপাইনের কাছে হেরে গেছি, কিন্তু ছেলেদের পারফরমেন্স খুবই ভালো ছিল। আশা করছি সেইধারা বজায় রাখতে পারব এবং সেসঙ্গে গোল আদায় করতে হবে। ফিলিস্তিনে ম্যাচে দলের ফরমেশন ৪-৪-২ প্রসঙ্গে এই ব্রিটিশ কোচ বলেন, ‘ফিলিস্তিন খুবই ভালো দল। সুতরাং ওই ম্যাচের জন্য আমাদের কৌশলের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। তবে বড় সমস্যা হচ্ছে তাদের দলে বেশ কজন দীর্ঘদেহী খেলোয়াড় রয়েছে। তারা বেশ ভালোও খেলছে। সুতরাং তাদের সঠিকভাবে মার্ক করে খেলা নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল ফিলিপাইন ও তাজিকিস্তান ম্যাচে প্রধান সমস্যা ছিল মাঠ। মাঠের কারণে স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি কোনো দল। মাঠ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের কোচ বলেন, মাঠের অবস্থা দুই দলের জন্যই সমান। ফলে পরিস্থিতি যেমনই হোক সেখানে ফিলিস্তিনের তুলনায় আমরাই বেশি খাপ খাওয়াতে পারব। তবে পরিস্থিতি কী হবে আমি জানি না। আমার চিন্তুা হচ্ছে, মাঠে গিয়ে যতটুকু সম্ভব নিজেদের খেলাটি ভালোভাবে খেলতে হবে। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ডিফেন্সে জোর দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর খেলা খেলবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষের খেলার চেয়ে আবহাওয়া ও দর্শক নিয়ে বেশি চিন্তিত ফিলিস্তিনের কোচ নুরউদ্দিন আলী। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে দুই দলের মধ্যে অনেক ব্যবধান। ফিলিস্তিনের অবস্থান ১০০ আর বাংলাদেশের ১৯৩। ফিলিস্তিন কোচ র‌্যাংকিংয়ের কথা মাথায় রাখছেন না। তার কথা, ‘বাংলাদেশ স্বাগতিক দল, ঘরের মাঠে তারা ভালোই খেলবে। তাই তাদের সমীহ করতে হবে। আমরা র‌্যাংকিংয়ে যতই এগিয়ে থাকি না কেন, মাঠের খেলাতে প্রমাণ হবে কে সেরা।’ এর আগে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পাঁচ আসরে একবার মাত্র ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই আসরে মালয়েশিয়ার কাছে হেরে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল স্বাগতিকদের। ২০১৬ সালে সর্বশেষ আসরে বাহারাইন অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ।