দর্পণ ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা নিয়ে অভিযোগ করে বলেছেন, বিএনপির নেতৃত্ব ধ্বংস করার জন্য সরকার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, হলফ করে বলতে পারি- দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ বিএনপির কোনো লোকই এ ঘটনায় জড়িত ছিলো না। কারণ যেকোনো হত্যাকাণ্ডের একটা উদ্দেশ্য থাকবে। এই উদ্দেশ্যে সুবিধাভোগী কে হয়েছে? আওয়ামী লীগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ এটাকে ইস্যু করে বিএনপিকে ধ্বংস করছে, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে, বিএনপির বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে মঙ্গলবার আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব অভিযোগ করেন। শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে জেহাদের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়। ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন নাজির উদ্দিন জেহাদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২১ আগস্টের মামলার রায় বুধবার হতে পারে। এই মামলার রায় নিয়ে বহু ঘটনা ঘটেছে, বহু কথা বলা হচ্ছে। প্রকৃত সত্যটা কেউ উদ্ঘাটন করতে চাচ্ছে না। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, মামলার সঠিক তদন্ত যদি করা হতো, সঠিকভাবে যদি দোষী ব্যক্তিদের বের করা যেতো, তাহলে আসল সত্য বেরিয়ে আসতো। রাজনৈতিকভাবে তারেক রহমানসহ নেতাদের জড়িয়ে দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিকভাবে এই মামলায় তাদের জড়িয়েছে।
দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আজকেও ভয়েস অব আমেরিকাতে বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। সবচেয়ে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হয়েছে নিম্ন বিচারিক আদালত। কারণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে এটি। কে পদন্নোতি পাবে, কে হাইকোর্টে যাবে, কাকে সুবিধা দেয়া হবে- তা সবই এই সরকারের নিয়ন্ত্রণে। এসব করে বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হত্যা মামলায় তদন্তভার অবসরপ্রাপ্ত কাহার আখন্দের কাছে ন্যস্ত হওয়ার পর মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও দলের নির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, খোন্দকার লুৎফর রহমান, জাগপার আসাদুর রহমান খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় নিয়ে কোনো কঠোর কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি। এক্ষেত্রে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার রায় হলেও দলটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে সারাদেশের জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।