প্রতিকি ছবি

সাইফুল্লাহ নাসির,বরগুনা প্রতিনিধিঃ ছেলেকে পরীক্ষায় অনৈতিক সুবিধা না দেয়ায় আমতলী সরকারী একে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই সিনিয়র শিক্ষককে গালাগাল ও হুমকি দিলেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও আমতলী সরকারী কলেজ’র প্রভাষক মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার।

জানা গেছে,গত ০১ অক্টোবর আমতলী উপজেলায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।ওই পরীক্ষায় আমতলী সরকারী একে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আমতলী সরকারী কলেজের প্রভাষক মোঃ নজরুল তালুকদারের ছেলে মোঃ রাফিজ তালুকদার রাফি পরীক্ষায় কক্ষে মোবাইল ফোন নিয়ে আসে।ওই মোবাইল ফোনে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর বাহির থেকে রাফি সংগ্রহ করে।এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির আহবায়ক শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম।পরে আহবায়ক পরীক্ষার্থী রাফির কাছে থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দেয়।বৃহস্পতিবার বিকেলে রাফি ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দিতে আসে।ওই সময় রাফি পরীক্ষায় অনৈতিক সুবিধা নিতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক শিক্ষক নুরুল ইসলাম তাতে রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাফি পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের হয়ে বাবা নজরুল তালুকদারকে জানায়।ছেলের কথা শুনে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ওইদিন পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক নুরুল ইসলামের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তাকে দেখিয়ে দেখার হুমকি দেয়।সাবেক সভাপতির এমন আচরণে বর্তমানে এনিয়ে ক্ষুব্ধ ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান,পরীক্ষা চলাকালীন রাফি অন্য একটি ছাত্রের খাতা দেখে লিখছিল।এ ঘটনা শিক্ষক নুরুল ইসলাম দেখে রাফিকে নিষেধ করেন।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাফি পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম জানান,বিদ্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে রাফি তালুকদারকে পরীক্ষায় অনৈতিক সুবিধা না দেয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।তিনি আরো বলেন,রাফি পরীক্ষার কক্ষে মোবাইল ফোন নিয়ে বাহির থেকে প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করছিল।রাফির ওই মোবাইল ফোন জব্দ করে প্রধান শিক্ষকের হাতে দিয়েছি।
বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক মোঃ নিয়াজ মোর্শ্বেদ বলেন,পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক নুরুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালিগালজ ও হুমকি দেয়ার প্রতিবাদ করলে আমাকে গালমন্দ করেছে সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বজলুর রহমানের মোবাইল ফোনে (০১৭৪…..৬৭) বারবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় শিক্ষকদের কাছে কোচিং না করায় আমার ছেলের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে পরীক্ষার কক্ষে অহেতুক ঝামেলা করছে শিক্ষকরা।যাতে আমার ছেলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে না পারে।
আমতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আকমল হোসেন বলেন,পরীক্ষা কক্ষে মোবাইল নেয়া অন্যায়। এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।