Sudan's President Omar al-Bashir gestures during a joint press conference with Italian Premier Romano Prodi, not seen, at the end of their meeting at Chigi palace, Premier's office, in Rome, Friday, Sept. 14, 2007. President Omar al-Bashir, who came to power in 1989 in a military and Islamic coup, arrived in Rome a few weeks before the expected deployment of an international peacekeeping force to try to improve the security situation in the war-ravaged western Sudanese region of Darfur. More than 200,000 people have died and 2.5 million have been uprooted since ethnic African rebels in Darfur took up arms against the Arab-dominated Sudanese government in 2003. (AP Photo/Gregorio Borgia)

দর্পণ ডেস্ক :
ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সুদানের প্রধানমন্ত্রী বাকরি হাসান সালেহসহ পুরো মন্ত্রিসভাকেই বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির। একই সঙ্গে তিনি ছোট আকারের সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং মুতাজ মুসা আবদুল্লাহকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। গত রোববার মধ্যরাতে সুদানের ক্ষমতাসীন দলের জরুরি সভা শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
এক সময়ের বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশ সুদান কয়েক বছর ধরে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে। উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে এ মুহূর্তে তীব্র বৈদেশিক মুদ্রার অভাব বিরাজ করছে। এক বছরে খাদ্যদ্রব্যের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়াসহ বর্তমানে ৬৫ শতাংশের মূল্যস্ফীতি নিয়ে ধুঁকছে দেশটির মানুষ। এ অবস্থায় বাকরি হাসান সালেহকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার এক বছরের মাথায় তাকে ও তার মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করলেন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির।
গত রোববার মধ্যরাতে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির শীর্ষ নেতারা এক জরুরি সভায় বসেন। সভায় সুদানের পুরো সরকারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। সভা শেষে প্রেসিডেন্ট বশিরের শীর্ষ উপদেষ্টা ফয়সাল হাসান ইব্রাহিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘অর্থনৈতিক দুরবস্থার সমাধান জরুরি। এজন্য প্রেসিডেন্ট বশির সব পর্যায়ে সরকার বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট অপেক্ষাকৃত ছোট ২১ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
হাসান ইব্রাহিম জানান, প্রেসিডেন্ট বশির মুতাজ মুসা আবদুল্লাহকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বিদায়ী সরকারের সেচমন্ত্রী ছিলেন। তবে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সালেহ আবদুল্লাহ প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে থেকে যাবেন। একই সঙ্গে দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহামেদ ওসমান ইউসিফ কাবিরকে নিয়োগ দিয়েছেন বশির।
ইব্রাহিম আরো জানান, নতুন প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ তার মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তবে তিনি কখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন, তা পরিষ্কার করা হয়নি।
এর আগে গত রোববার সকালে প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির সালেহর সরকারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি নতুন সরকার গঠন করবেন এবং যারা আবারও সুদানি জনগণের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার তৈরি করতে পারেন।
সংকট গভীর হচ্ছে
সুদানের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন চরম পর্যায়ে চলে গেছে। গত এক বছরে খাদ্যদ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ডলারের বিপরীতে সুদানি পাউন্ডের দাম একেবারেই পড়ে গেছে। চলতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদানি পাউন্ডের মূল্য দুইবার কমিয়েছে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত হার অনুযায়ী এক মার্কিন ডলারের দাম ২৮ সুদানি পাউন্ড হলেও কালোবাজারে এক ডলার বিক্রি হচ্ছে ৪১ টাকায়। ব্যাংকগুলো মারাত্মক তারল্য সংকটে ভুগছে। আমানতধারীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক তা দিতে পারছে না। এজন্য বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে প্রায়ই লম্বা লাইন দেখতে পাওয়া যায়। আশা করা হচ্ছিল, গত বছরের অক্টোবর মাসে সুদানের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে।
মূলত চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটির তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম ঘানদোর সুদানের অর্থনৈতিক সংকটের দিকটি প্রথমে সামনে নিয়ে আসেন। তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে জানান, তহবিলের অভাবে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টাফদের বেতন দিতে পারছেন না। এর এক দিন পরই বশির মন্ত্রিসভা থেকে ঘানদোরকে বরখাস্ত করেন এবং সংকট মোকাবেলায় নতুন সরকারকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ওমর আল-বশির ১৯৮৯ সালে সুদানের ক্ষমতায় আসেন। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স ।