সাইফুল্লাহ নাসির, বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলীতে আমন ব্রী-৪৯ বীজ বিক্রয়ে শাহাদাত মাতুব্বর নামে এক খুচরা বীজ বিক্রেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বীজ ক্রেতা কৃষকরা।এ সকল বীজক্রেতা কৃষকেরা আগামী আমন মৌসুমে তাদের জমিতে ফসল না পাওয়ার আশংকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে,উপজেলার সওদাগরপাড়া গ্রামের আনোয়ার মাতুব্বরের ছেলে শাহাদাত মাতুব্বর একজন খুচরা বীজ ব্যবসায়ী।চলতি আমন চাষের মৌসুমে শাহাদাত মাতুব্বরের নিকট থেকে স্থানীয় কৃষকরা ব্রি-৪৯ ধান চড়া মূল্যে ক্রয় করেন।অগ্রহায়ন মাসে এ বীজের ফসল আসার কথা। শাহাদাত মাতুব্বর তাদেরকে সঠিক বীজ না দিয়ে অন্য জাতের নিম্নমানের বীজ বিক্রয় করেন,আসল বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে ৯০ দিনে ফসল আসে।অথচ আমন মৌসুমে এ বীজ বপনের উপযোগী নয়।এ বীজ বপন করার মাত্র ২০/২৫ দিনের মধ্যে ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে ধান বের হতে থাকে।এ অবস্থা দেখে কৃষকরা এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন।তারা ক্রয়কৃত ধানের প্যাকেট সাংবাদিকদের কাছে নিয়ে গেলে দেখা যায়,প্যাকেটের গায়ে ধানের জাত,মূল্য ও তারিখের স্হলে কাটাছেড়া করা।
বীজ ক্রেতা কবির মোল্লা বলেন,আমি ৩০ বিঘা জমিতে এ বীজ বপন করেছি,ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে ধানের শীষ বের হতে দেখে দিশেহারা হয়ে গেছি,জমি পুনরায় চাষ করতে হবে কিন্তু এখন বীজ পাব কোথায়?কৃষক আবুল কালাম বলেন,আমি ১০ বিঘা জমিতে বীজ বপন করেছি, অগ্রহায়ন মাসে ফসল আসার কথা কিন্তু বীজ তলা থেকে বীজ নিয়ে বপন করার মাত্র ১৮/২০ দিনের মধ্যে শীষ বের হয়েছে, এখন আবার এ জমি চাষ করতে নতুন করে খরচ যোগার করতে হবে।একই অভিযোগ করেন সওদাগর পাড়ার কৃষক জয়নাল,কবির হোসেন,খলিল ও কাওছারসহ অনেকে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বলেন,জমি পুনরায় চাষ করতে না পারলে আমন মৌসুমে ফসল পাওয়া যাবেনা এতে আমাদের বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার টাকা লোকসান হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহাদাত মাতুব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিষয়টি কৃষি অফিসার জানেন,আমি উপজেলা ডিলার আবুল হোসেন এর নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করেছি।
ডিলার আবুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি বিএডিসি থেকে ব্রী-৪৯ সহ বিভিন্ন জাতের বীজ এনে কৃষক ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করেছি।বীজের প্যাকেটের গায়ে ওভার রাইটিংয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিলার আবুল হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান,উপজেলায় একজন ডিলার থাকায় খুচরা বীজ বিক্রেতাদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।প্যাকেটের গায়ে ওভার রাইটিং এর ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান।