সাইফুল্লাহ নাসির ,বরগুনা প্রতিনিধিঃ মোটর সাইকেলের কিস্তির টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ হাফিজা আক্তারকে স্বামী বেলাল হোসেন ও শ্বাশুড়ী রাশিদা বেগম মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।গুরুতর আহত হাফিজাকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া গ্রামে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামের হারুন অর রশিদের কন্যা হাফিজা আক্তারকে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে বেলাল হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তিন ভরি স্বর্ণালংকার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয়।বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে স্ত্রী হাফিজাকে নির্যাতন করে আসছে স্বামী ও শ্বাশুড়ী।গত বছর মোটর সাইকেল কেনার জন্য স্ত্রী হাফিজাকে বাবার বাড়ী থেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে।কিন্তু হাফিজার দরিদ্র বাবা হারুন অর রশিদ এ টাকা দিতে অস্বীকার করে।ওই সময় থেকে স্বামী বেলাল হোসেন ও শ্বাশুড়ী রাশিদা বেগম হাফিজাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামী বেলাল হোসেন মা রাশিদার পরামর্শ মোতাবেক মোটর সাইকেলের কিস্তির দশ হাজার টাকা হাফিজার বাবার বাড়ী থেকে এনে দিতে বলে।হাফিজা বাবার বাড়ী থেকে এ টাকা এনে দিতে অস্বীকার করে।এতে ক্ষিপ্ত হয় স্বামী বেলাল হোসেন ও শ্বাশুড়ী রাশিদা বেগম।এ নিয়ে ওইদিন বিকেলে শ্বাশুড়ী রাশিদার সাথে কথা কাটাকাটি হয়।এক পর্যায় স্বামী ও শ্বাশুড়ী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ হাফিজাকে লাথি ও কিল-ঘুষি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।এতে হাফিজা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।খবর পেয়ে স্বজনরা হাফিজাকে উদ্ধার করে ওইদিন রাত ১০ টার দিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ হাফিজা বেগম বলেন, আমার স্বামী ও শ্বাশুড়ী মোটর সাইকেলের কিস্তির ১০ হাজার টাকা আমার বাবার বাড়ী থেকে এনে দিতে বলে। আমি এ টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে আমার পেটে লাথি, কিল-ঘুষি দিয়ে মারধর করেছে। মারধরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তিনি আরও জানান,আমার পেটে ব্যথা করছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হারুন-অর রশিদ বলেন,ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হাফিজার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
স্বামী বেলাল হোসেন মুঠোফোনে স্ত্রী হাফিজার বাবার বাড়ী থেকে দশ হাজার টাকা এনে দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার স্ত্রী যদি বলে থাকে তাহলে মারধর করেছি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।