অনলাইন ডেস্ক : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা গায়েবের পর এবার মধ্যপাড়া খনি থেকে গায়েব হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন মূল্যবান পাথর। এ পাথরের মধ্যে রয়েছে মূল্যবান অ্যামেলগেমেট গ্রানাইট পাথর ও শিলা। গায়েব হওয়া পাথরের মূল্য ৫৬ কোটি টাকা।

দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) থেকে এ পাথর গায়েবের অভিযোগ উঠেছে। ২৯ জুলাই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় পাথর গায়েবের এ তথ্য ফাঁস হয়।

বোর্ডসভায় কোম্পানির মহাব্যবস্থাপকের দেয়া একটি তদন্ত প্রতিবেদনে এই বিপুল পরিমাণ পাথর গায়েবের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য এখন কোম্পানির পক্ষ থেকে ‘পুরো পাথর মাটির নিচে দেবে গেছে’ বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে পুরো অর্থ ও পাথরের সংখ্যা কোম্পানির মূল হিসাব থেকে বাদ দেয়া বা ‘অবলোপন’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু পর্ষদ সভায় এ সুপারিশ অনুমোদন হয়নি। বোর্ডসভায় এ ঘটনায় অধিকতর তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কোম্পানির উৎপাদিত পাথর, বিক্রি ও মজুদের তথ্য উদ্ঘাটনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে সেগুলো অবলোপন (মূল হিসাব থেকে আলাদা) করার নজির রয়েছে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবার মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি থেকে ৫৬ কোটি টাকার গ্রানাইট অবলোপন করার সুপারিশ করা হয়। এটি নজিরবিহীন। তাদের মতে- কোম্পানির কয়লা উত্তোলন, বিক্রি ও মজুদ তথ্যের মধ্যে বড় ধরনের গরমিল রয়েছে।

কোম্পানির হিসাবে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন পাথর মজুদ থাকার কথা, কিন্তু বাস্তবে এ পরিমাণ পাথর নেই। এ কারণে এ পাথরকে কোম্পানির মূল হিসাব থেকে বাদ দিয়ে কাগজে-কলমে ব্যালেন্স শিট মেলানোর জন্য এর দাম অবলোপন করতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনায় খোদ পর্ষদ সদস্যদের মধ্যেও তোলপাড় শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পর্ষদের একজন সদস্য যুগান্তরকে বলেন, কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পাথর গায়েবের যে তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে বাস্তবে তা আরও অনেক বেশি হবে।