অনলাইন ডেস্ক :  শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে শুক্রবার মধ্যরাতে। এদিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে ছায়াচ্ছন্ন থাকবে চাঁদ।

শতাব্দীর এই দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে দেখা যাবে। এছাড়াও দেখতে পারবেন এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপের মানুষও।

প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা (১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট) ধরে চাঁদ পুরোপুরি ঢেকে যাবে পৃথিবীর ছায়ায়। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের আগে ও পরে আরও দুইবার হবে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ আর আগে-পরের দু’টি আংশিক চন্দ্রগ্রহণ মিলিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলো-আঁধারিতে ঢাকা থাকবে চাঁদ।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, শুক্রবার পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ১৩ মিনিট ৬ সেকেন্ডে শুরু হওয়া চন্দ্রগ্রহণ শেষ হবে ভোর ৫টা ৩০ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে।

কেন্দ্রীয় গ্রহণ হবে বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ২১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে এবং গ্রহণের সর্বোচ্চ মাত্রা হবে ১.৬১৪। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বাংলাদেশ থেকে গ্রহণটি সম্পূর্ণ দেখা যাবে।

চন্দ্রগ্রহণ জড়িয়ে নানা কুসংস্কার রয়েছে যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যেমন, গ্রহণের সময় ঘরের বাইরে বেরোতে নেই, খাবার থাকলে তা ফেলে দিতে হয়, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের খুবই সাবধানে থাকতে হয়।

চন্দ্রগ্রহণ দেখার সময় কোনো বিধি কি মানবেন। জানাচ্ছে জ্যোতিষ ও বিজ্ঞান। আসুন জেনে নেই চন্দ্রগ্রহণ দেখার সময় কোনো বিধি কি মেনে চলবেন।

খাওয়া বা পান করা

প্রায়ই শুনে থাকবেন চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কিছু খাওয়া বা পান করা কি উচিত? গ্রহণের সময়ে খাওয়া পা পান করায় বৈজ্ঞানিকভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যোগ নেই ধর্মের সঙ্গেও। শুধুই কুসংস্কারের বশে আজকের যুগেও অনেকে গ্রহণের সময়ে খাওয়াদাওয়া বা পানি পানও করেন না। এমনকি বাড়তি খাবার থাকলে তা ফেলেও দেন অনেকে।

মানুষের মন

মানুষের মনে কি কোনও প্রভাব ফেলে চন্দ্রগ্রহণ? নাসা এমন তথ্য মানতে একেবারেই রাজি নয়। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কোনো ব্যক্তির মানসিক সমস্যা হলে তা একেবারেই তার মনের ব্যাপার। ছোটবেলা থেকে শুনে আসা ভয়গুলোই কাজ করে। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেই জানাচ্ছে নাসা।

অন্তঃসত্ত্বা নারী

অনেকে প্রশ্ন করেন অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চন্দ্রগ্রহণ দেখলে তাদের গর্ভস্থ সন্তানের কি ক্ষতি হয়? একেবারেই তা হয় না। জ্যোতিষ মতে, এমন ধারণা একেবারেই ভুল। গ্রহণের সময়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তার বা সন্তানের কোনও ক্ষতির সম্ভাবনাই নেই এর থেকে।

পশুদের আচরণে পরিবর্তন

চন্দ্রগ্রহণের সময়ে নাকি অনেক পশুর আচরণে পরিবর্তন দেখা যায়! চন্দ্রগ্রহণের সময় পশুপাখিরা অযথা ডাকাডাকি করে, ডানা ঝাপটায়। এর কারণ, অসময়ে অন্ধকার হয়ে যাওয়া। ২০১০ সালেই এমন তথ্যই প্রকাশ করা হয় পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগ থেকে।

অসুস্থ

চন্দ্রগ্রহণের সময় মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছিল। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে প্রচুর মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, করোনারি, ইউরিনারি, হেমারেজের সমস্যা নিয়ে। কিন্তু শারীরিক এই সমস্যাগুলো যে চন্দ্রগ্রহণের জন্যই হয়েছিল তা প্রমাণসাপেক্ষ।