অনলাইন ডেস্ক : চার বছর আগে মুক্তি পাওয়া ‘এন্টারটেনমেন্ট’ ছবিটির কাহিনী মনে আছে? সেই ছবিতে দেখা যায়, এক ধনকুবের মালিক তার সমস্ত সম্পত্তি লিখে দেয় আদরের পোষ্য ‘এন্টারটেনমেন্ট’কে। এবার ঠিক এর বিপরীত ঘটনা ঘটলো চীনে। সম্প্রতি এক পোষ্য কুকুরের সাহায্যে চীনের এক মনিব গরিব থেকে ধনী হয়েছেন! আর এ ঘটনার পর ওই পোষ্য কুকুরটি ‘সেলেব্রিটি অ্যানিমেল’ তকমাও পেয়েছে।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, রাজধানী বেজিংয়ের কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি ছিল। বাড়িটির আশপাশে কেউ আসতেন না। আর সেই বাড়িই এখন বিশাল ‘ম্যানসন’। মে মাস থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে প্রাসাদটি। দুই একর জমিতে রয়েছে অতিথিশালা, রয়েছে স্পা, ইন্ডোর পুল, এমনকি ট্রাম্পোলিন। রয়েছে পার্টি রুম। চকবোর্ড ওয়ালও রয়েছে আঁকিবুকির জন্য। আর এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে এক পোষ্য কুকুরের জন্য।পাঁচ লাখ ডলারের বাড়িতে যে বাস করছে এ পোষ্য কুকুরের নাম সাইলার। সেখানে শোভা পেয়েছে সাইলারের মূর্তিও।
এ প্রসঙ্গে সাইলারের মালিক ঝৌ তিয়াংশিয়াও বলেন, ‘ওর জন্যই আমার সব কিছু। ও আসার আগে আমার কিছুই ছিল না’। বেজিং শহরের চারপাশে কান পাতলেই সাইলারের নাম শোনা যাচ্ছে। সে এখন ‘সেলেব্রিটি অ্যানিম্যাল।’
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইলার আর ঝৌ-এর গল্পটা কিন্তু একদম ফিল্মের মতোই। চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাও জে দংয়ের আমলে সারমেয় নিয়ে নানারকম বিধিনিষেধ ছিল। তবে পরে তা শিথিল হয়। চার বছর আগে পর্যন্ত স্কুলছুট ঝৌ দাদীর সঙ্গে থাকতেন আর ভিডিও গেমস খেলে দিন পার করতেন। কোনও রকমে খাওয়াটুকু জুটত তাদের। এমন সময় এক বন্ধু তাকে পোষ্য কুকুর কেনার পরামর্শ দেন। পরে ঝৌ সস্তায় একটি কুকুর কেনেন।
জনপ্রিয় এক রিয়েলিটির ‘সুপারহিরোর’ চরিত্র থেকে ঝৌ তার পোষ্য কুকুরের নাম রাখেন সাইলার। আসলে সাইলার তার কাছে, ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’। সাইলার তো মানুষের মতোই হাঁটে। হাই ফাইভের মানে জানে। টেবিলের উপর বালিশ মাথায় ঘুমাতে যায়। আর এই সবই ইউটিউব দেখে সাইলারকে শেখান ঝৌ। শেখান লেডি গাগার গানের সঙ্গে নাচতেও। সাইলারের এই ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে না করতেই তা সবার মন জয় করে। স্যোসাল মিডিয়ায় সাইলারের ফলোয়ার হয়ে যায় আট লাখের বেশি।
এ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই বদলে যায় ঝৌয়ের জীবন। ভিডিও প্রতি মিলতে থাকে অর্থ। প্রত্যেকে সাইলারকে দেখতে চায়, আদর করতে চায়। ভিডিও থেকে উপার্জিত অর্থ জমিয়ে সাইলারের জন্যই ওই পরিত্যক্ত বাড়িটা দু’বছর আগে কেনেন ঝৌ। শুরু হয় তার মেকওভার। পোষ্যদের জন্য বিশেষ খাবার আর খেলনার ই-কমার্স সাইটও খুলে বসেন। এরপর শুধুই সামনে পথচলা। এই ম্যানসনেই তার পোষ্যদের জন্য পার্লার ও স্পার ব্যবস্থাও রয়েছে। যেখানে সারমেয়রা অয়েল ম্যাসাজও করতে পারে ৪০০ ডলারের বিনিময়ে। রয়েছে ২৬ ডলারে পোষ্যদের মেডিসিনাল স্পা-এর ব্যবস্থাও। এ ভাবে দু’বেলা ঠিকমতো খেতে না পাওয়া ঝৌ এখন ধনকুবের।
ঝৌয়ের একটাই চাওয়া, প্রিয় সাইলার যেন ভাল থাকে।