অনলাইন ডেস্ক : কোরবানির ঈদ আসতে এখনও প্রায় এক মাস বাকি। তবে এখন থেকেই বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের মসলার দাম। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজন (১২ পিস) ডিমের (ফার্ম) দাম ১০ টাকা বেড়ে শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়।

এছাড়া রাজধানীর বাজারগুলোয় গত সপ্তাহের মতো এদিনও উচ্চমূল্যে বিক্রি হয় চাল ও পেঁয়াজ। তবে সবজি, ডাল, ভোজ্য তেল, রসুন, মাছ-মাংসসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম ছিল স্থিতিশীল।

শুক্রবার রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর ও মালিবাগ বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, রোজার ঈদের সময় কেজিপ্রতি মানভেদে এলাচের দাম ছিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। শুক্রবার তা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯২০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। দারুচিনির দাম ছিল ২৬৮ টাকা কেজি, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। ৫৫০ টাকার জয়ফল বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়। এছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা জিরা প্রতি কেজির দাম ছিল ২৮৩-৩০০ টাকা, শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৩৩৫ টাকায়।

সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরার কেজি ছিল ৩৯০ টাকা, যা বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকায়। এছাড়া চীন থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হয়েছে ৩৯৫ টাকা কেজি। আর ১১০ টাকা কেজির মিষ্টি জিরা শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের উপহার স্টোরের মসলা বিক্রেতা মো. চুন্নু মিয়া যুগান্তরকে বলেন, কোরবানির ঈদ আসতে আরও এক মাস বাকি। এখন মসলার বাড়তি চাহিদা না থাকলেও আমদানিকারকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এদিকে সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোয় গত সপ্তাহের ৯০ টাকা ডজনের ডিম বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। পুরান ঢাকার নয়া বাজারের ডিম বিক্রেতা মো. এখলাস যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি ডিমের বাজারে শুক্রবার দিমের দাম একটু বাড়তি। তাই বেশি দাম দিয়ে এনে লাভ রেখে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পোলট্রি খাতে ধস নেমেছে। অনেক খামারি লোকসানের জন্য খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। যার কারণে ডিমের জোগান কমে গেছে। তাই বাজারে সরবরাহ কম। এ কারণেই ডিমের দাম একটু বেড়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহের মতো রাজধানীর বাজারগুলোয় উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়েছে চাল। মালিবাগ বাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, শুক্রবার নতুন করে চালের দাম বাড়েনি। গত সপ্তাহের দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি। মিনিকেট ও নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকায়। এছাড়া বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে গত সপ্তাহের মতো উচ্চমূল্য বিরাজ করছে পেঁয়াজে। তবে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। বরবটি বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা কেজি। শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি, গাজর প্রতি কেজি ৬৫ টাকা, বেগুন মান ও বাজারভেদে কেজি ৬০-৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, মাঝারি আকারের লাউ প্রতিটি ৪৫-৫০ টাকা, টমেটোর কেজি ৯০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৪০-১৫০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গার কেজি ৩৫ টাকা, আকারভেদে পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৩৫-৪০ টাকা। আদা ১০০-১১০ টাকা ও রসুন ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

কারওয়ান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. ইসতিয়াক যুগান্তরকে বলেন, এখন পর্যন্ত চাল ও পেঁয়াজের দাম কমেনি। বরং ডিম ও মসলার দাম বেড়েছে। এটা জানা কথা কোরবানির ঈদের আগে সব ধরনের মসলার দাম বাড়িয়ে দেবে বিক্রেতারা। কিন্তু এক মাস আগেই বাড়িয়ে দেয়া মেনে নেয়া যায় না।

মাছ ও মাংসের বাজারে শুক্রবার অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে। সেক্ষেত্রে রাজধানীর বাজারে রুই ও কাতলা প্রতি কেজি ২৩০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, বড় আকারের চিংড়ি প্রতি কেজি এক হাজার, মাঝারি ৭০০ টাকা ও ছোট আকারের চিংড়ি ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১৩০-১৪০ টাকা, কই ১৪৫-১৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। সিলভার কার্প ১০০-১৩০ টাকা কেজি, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০-১৩০ টাকা, নলা ১২৫-১৩৫ টাকা ও সরপুঁটি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

মাংসের বাজার ছিল স্থিতিশীল। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাকিস্তানি মুরগি আকারভেদে ১৫০-৩০০ টাকা, লেয়ার প্রতি কেজি ২০০ টাকা ও গরুর মাংস ৪৭০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।