অনলাইন ডেস্ক : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ঋণের সুদহার রাতারাতি এক অঙ্কে নামিয়ে আনা সম্ভব নয়। আরও কিছু সময় লাগবে। এত দ্রুতও সব ব্যাংকের পক্ষে কমানো সম্ভব নয়।

বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গত ২০ জুন ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি এক বৈঠক থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তিন মাস মেয়াদি আমানত নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে। একই দিন অর্থমন্ত্রী সব সরকারি ব্যাংকের এমডিদের নিয়ে এক বৈঠক করে সুদহার কমানোর কথা বলেন।

গত ২৭ জুন ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এক বৈঠক থেকে মালিক পক্ষের ঘোষণা কার্যকরের কথা জানানো হয়। মালিক পক্ষ ও ব্যাংকের এমডিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক করে জানিয়েছেন, সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সব ব্যাংক সম্মত। এরপরও বেশিরভাগ ব্যাংক এখনও সুদহার কমায়নি। ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ তো দূরের কথা, অনেক ব্যাংক এখনও আমানত নিচ্ছে ৯ শতাংশের বেশি সুদে।

বুধবার ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তার অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুহিত। এ সময় ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানোর প্রসঙ্গটি উঠে আসে। সব ব্যাংক এখনও ঋণ সুদের হার এক অঙ্কে না নামানোর বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, এখনও নামায়নি। তবে ৯ শতাংশ সুদ নির্ধারণের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা কঠিন।’

মুহিতের ভাষায়, এই টার্গেট পূরণ করা ‘ভেরি মাচ ডিফিকাল্ট’।

অর্থমন্ত্রী জানান, তিনি প্রথমে বলেছেন সুদহার এক অঙ্কে কমিয়ে আনা হবে। তবে এত জলদি করা যাবে না। সব ব্যাংকের পক্ষে এত দ্রুত সময়ে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সম্ভব নয়।

আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ হওয়ায় বেসরকারি ব্যাংক থেকে সরকারি ব্যাংকগুলো তাদের গচ্ছিত তহবিল তুলে নিচ্ছে কি-না জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘আমি জানি না। হয়তো উঠাবে, এটা তো তাদের ব্যবসার ব্যাপার।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো এত কম সুদে কীভাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে তহবিল জোগান দেবে। কারণ, এসব ব্যাংকও তো অন্য জায়গা থেকে আমানত সংগ্রহ করে। এ কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এখন সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

সুদহার কোনো কোনো ব্যাংকে না কমানোয় এ খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো সমস্যা হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে পরবর্তী ধাপে কাজ করবে।