দর্পণ ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে স্থায়ীভাবে বের হয়ে গেছে যুক্তরাজ্য। তবে বাণিজ্য চালু রাখতে নতুন চুক্তি হলেও তাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যাধিক মাখামাখিও ভালো দৃষ্টিতে দেখছে না যুক্তরাজ্যের প্রতিবেশীরা।

এ নিয়েই যেন হালকা হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। ব্রিটিশদের লোকদেখানো বন্ধুত্ব বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ব্রিটেন কোন রাজনীতি বেছে নেবে? এটা যুক্তরাষ্ট্রের সেরা মিত্র, ইইউর সেরা মিত্র এবং নতুন সিঙ্গাপুর হতে পারে না। তাদের যেকোনো একটা কৌশল বেছে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় দেশটির (যুক্তরাজ্য) নেতারা এই সব কৌশলই বিক্রি করেছেন। তারা যদি পুরোপুরি ট্রান্সআটলান্টিক নীতি নিয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের (ইইউ) এর স্পষ্টতা দরকার। কারণ তখন নিয়ম এবং বাজার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে।

ম্যাক্রোঁ বলেন, যুক্তরাজ্য যদি নতুন সিঙ্গাপুর হতে চায়, যেটা তারা একসময় হতে চেয়েছিল… আমি জানি না কী হবে। এই সিদ্ধান্ত আমার না। তবে আমি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চাইব। আমাদের ভাগ্য পরস্পর সংযুক্ত, আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক পদক্ষেপ সংযুক্ত। আমাদের গবেষক এবং শিল্পপতিরা একসঙ্গে কাজ করেন… আমি সার্বভৌম দেশ ও মহাদেশে বিশ্বাস করি, নব্য-জাতীয়তাবাদে নয়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, অভিন্ন উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং একটি অভিন্ন লক্ষ্যের জন্য আমি রয়েছি। আশা করি বরিস জনসনও সেই পথে থাকবেন। কারণ আমার ধারণা, ব্রিটিশ জনগণ সেটাই চায়। আমরা মিত্র থাকি। ইতিহাস এবং ভূগোল পরিবর্তিত হয় না। তাই আমার মনে হয় না, ব্রিটিশ জনগণের লক্ষ্য আমাদের চেয়ে আলাদা।

এসময় ভ্যাকসিন, ব্রেক্সিট এবং করোনাজনিত সমস্যায় পরস্পরকে দোষারোপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করলে ম্যাক্রোঁ কিছুটা কৌতুক করেই বলেন, যখনই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কোনও ঝামেলা হয়, ব্রিটিশরা ফ্রান্সকে ও আমাকে দোষারোপ করতে ভালোবাসে, আর বলতে থাকে, এর জন্য আমরাই দায়ী। আমি এটা মেনে নিয়েছি।

এদিন কোনো রাখঢাক না করেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট সরাসরি বলেন, আমি আগেও বলেছি, ব্রেক্সিট ভুল বলে মনে করি। আমি জনগণের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি এবং জনগণ ভোট দিয়েছে। সুতরাং এটা হতেই হতো। কিন্তু আমার মনে হয়, সেই ভোট ছিল অনেক মিথ্যার ভিত্তিতে এবং এখন আমরা দেখতেই পাচ্ছি, এটি অনেক বিষয় কঠিন করে তুলেছে।