দর্পণ ডেস্ক : বলিউডে পা রেখেছিলেন অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে। পেয়েছিলেন দক্ষিণী সিনেমায় খ্যাতি। সবে ডালপালা মেলেছিলো ক্যারিয়ারটা; কিন্তু সব থেমে গেল আচমকাই। এক বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মাত্র ৩১ বছর বয়সেই মারা যান অভিনেত্রী সৌন্দর্য।

অভিনেত্রী সৌন্দর্য ১৯৭২ সালের ১৮ জুলাই জন্মেছিলেন টিপু সুলতানের রাজত্বের জন্য বিখ্যাত মহীশূরে। তার নাম রাখা হয় কে এস সৌম্য সত্যনারায়ণ। পরে সিনেমাতে অভিনয়ের সময় তিনি নাম পাল্টে ফেলেন।

সৌন্দর্যর বাবা চিত্রনাট্য লেখক-প্রযোজক হলেও তার নিজের কোনোদিন নায়িকা হওয়ার ইচ্ছে ছিল না। বরং সৌন্দর্যর ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবেন। তিনি এমবিবিএস কোর্সে ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম বর্ষের পরেই পড়া ছেড়ে দেন। পরিবর্তে তিনি ছবিতে অভিনয় শুরু করেন।

কন্নড় ভাষায় তার প্রথম সিনেমা ‘গন্ধর্ব’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯২ সালে। ধীরে ধীরে তামিল এবং তেলুগু ইন্ডাস্ট্রিতেও প্রথম সারিতে চলে আসেন সৌন্দর্য। বলা হয়, জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রবাদ প্রতিম অভিনেত্রী সাবিত্রী গণেশনের পরেই তার স্থান। সৌন্দর্যকে বলা হতো ‘আধুনিক তেলুগু ছবির সাবিত্রী’।

তেলুগু ছবিতে ডাগ্গুবতী ভেঙ্কটেশ এবং সৌন্দর্যর জুটি ছিল দর্শকদের খুবই পছন্দের। তামিল, তেলুগু এবং মাতৃভাষা কন্নড়ের পরে মালয়ালম ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।

প্রথম হিন্দি ছবি ‘সূর্যবংশম’-এ তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন ১৯৯৯ সালে। বলিউডে আত্মপ্রকাশেই তার বিপরীতে নায়ক ছিলেন স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। ২০০৩ সালে সৌন্দর্য অভিনয় করেন ‘দীপা’ ছবিতে। কন্নড় ভাষার এই ছবির প্রযোজকও ছিলেন তিনি। ছবিটি জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছিলো। সে বছরই তিনি বিয়ে করেন জি এস রঘুকে। ২০০৪ সালে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। তার নায়িকা এবং সমাজসেবী ভাবমূর্তি রাজনীতিতে কার্যকর হবে বলে মনে করা হয়েছিল।

কিন্তু সব থেমে গেল ২০০৪ সালের ১৭ এপ্রিল। সেদিন বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে চড়ে করিমনগর যাচ্ছিলেন সৌন্দর্য এবং তার ভাই। মাটি থেকে ১০০ ফুট উচ্চতায় উড়ন্ত অবস্থাতেই আগুন ধরে যায় এয়ারক্র্যাফ্টে। দুর্ঘটনায় ভাইসহ মারা যান সৌন্দর্য।

সৌন্দর্যের মৃত্যুর আট বছর পরে তার উইল নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়। বিয়ের দুই মাস আগে নিজের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির উইল করেছিলেন তিনি। এর এক বছর পরেই তার মৃত্যু হয়। মা এবং ভাইয়ের পরিবারকে সম্পত্তির বড় অংশ দিয়েছিলেন সৌন্দর্য। একটা বড় অংশ রেখেছিলেন তার হবু স্বামী এবং নিজেদের সন্তানদের জন্য।