নতুন করে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরও বিবদমান দুই পক্ষের হামলায় অনেকে হতাহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি ভাঙ্গার দায়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া, উভয় পক্ষই পরস্পরকে দুষছে এখন।বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে উত্তেজনা হ্রাসে রুশ মধ্যস্থতায় স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে দ্বিতীয়বারের মতো ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছিল।
শনিবার আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজার আবাসিক এলাকায় আর্মেনিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১৩ জন প্রাণ হারানোর পর এর নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ প্রধান এ আহ্বান জানান। গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এই ব্যাপক লড়াই-সংঘর্ষে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারেক রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, গানজা শহরের হামলায় শিশুসহ যেসব সাধারণ মানুষ মারা গেছে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মহাসচিব ১৮ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি উভয়পক্ষকে মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি অবিলম্বে বাস্তবসম্মত আলোচনা পুনরায় শুরু করারও আহ্বান জানান।’
নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটির মধ্যে বিবাদ বহু পুরনো। ১৯৯৪ সালে একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ছয় বছরের সংঘাতের অবসান হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ নৃশংসতা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মধ্যে ফের এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৮০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
নাগোরনো-কারাবাখ ছিটমহলটিতে আর্মেনীয় খিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর বসবাস। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মুসলিম অধ্যুষিত আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় অঞ্চলটি। আর এতে সমর্থন জানিয়ে আজারবাইজানের অভ্যন্তরে বৃহৎ ভূখণ্ড দখলে নিয়ে ছিটমহলটির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে আর্মেনিয়া।
আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলটি আজারবাইজানের হলেও নব্বইয়ের দশকে দেশ দুটির মাঝে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং বাস্ত্যুচুত হন ১০ লাখের বেশি। ওই সময়ে মাঝে মধ্যেই অঞ্চলটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই হয়েছে। কিন্তু এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা একেবারেই ভয়াবহ।