দর্পণ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে এবার করোনা হানা দিয়েছে। দেশটির মেরিন কর্পসের আরও এক শীর্ষ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেনারেল গেরি থমাস নামের ওই কর্মকর্তার দেহে করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর দু’জন শীর্ষ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হলেন।

এদিকে, ওই দুই কর্মকর্তার করোনা ধরা পড়ায় পেন্টাগনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে যারা যারা এই দু’জনের সংস্পর্শে এসেছেন তারা সেলফ আইসোলেশনে গেছেন।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার স্ত্রীর করোনায় আক্রান্তের খবর প্রকাশ প্রায়। এরপর থেকেই একের পর এক মার্কিন কর্মকর্তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের প্রায় ডজন খানেক কর্মকর্তা করোনায় ধরা পড়েছেন। হোয়াইট হাউসের পর এবার সামরিক বাহিনীতেও হানা দিল করোনা।

মেরিন কর্পসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত সহকারী কমান্ডার গেরি থমাসের দেহে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তিনি বর্তমানে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। থমাসের দেহে করোনা পজিটিভ ধরার পড়ার খবর প্রথম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তার দেহে করোনা ধরা পড়ার পর মেরিন কর্পসের চেয়ারম্যান, আর্মি জেনারেল মার্ক মিলেসহ প্রায় সব জয়েন্ট চীফ অব স্টাফ বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। ওই কর্মকর্তারা করোনা আক্রান্ত সামরিক কর্মকর্তা গেরি থমাস এবং অপর কোস্ট গার্ড নং. ২ কর্মকর্তা চার্লস রে’র সঙ্গে গত সপ্তাহে এক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি এবং ইউএস সাইবার কমান্ডের প্রধান জেনারেল পল ন্যাকাসন, এমনকি সেনা প্রধান, নৌবাহিনীর প্রধান এবং বিমান বাহিনীর প্রধানও আইসোলেশনে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে শীর্ষ কর্মকর্তারা আইসোলেশনে থাকলেও পেন্টাগনের মুখপাত্র জোনাথন হোফিম্যান বলছেন, এই মুহূর্তে অতিরিক্ত কোনো শীর্ষ নেতার করোনা পজিটিভের রিপোর্ট তাদের কাছে নেই।

তিনি বলেন, আমাদেরকে সেলফ কোয়ারেন্টাইন ও কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের বিষয়ে সিডিসির (ইউএস সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন) গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। তবে আর কোনো শীর্ষ কর্মকর্তার দেহে করোনার সম্ভাব্য কোনো লক্ষণ ধরা পড়েছে কীনা সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি হোফম্যান।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শুক্রবার তাকে একটি সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনদিন সেখানে চিকিৎসা শেষে স্থানীয় সময় সোমবার হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরেন তিনি।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডির করোনায় আক্রান্তের সাম্প্রতিক খবরে হোয়াইট হাউসের স্টাফদের সম্পূর্ণ পিপিই পরিধান এবং সব ধরনের সতর্কতা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সরাসরি সংস্পর্শে থাকা লোকজনকে প্রতিদিনই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে যে, তারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কীনা। এছাড়া সাপোর্ট স্টাফদের প্রতি ৪৮ ঘণ্টা পর পর পরীক্ষা করা হচ্ছে।

আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করোনায় আক্রান্তের খবরে নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ট্রাম্প বলছেন, তার করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি ঈশ্বরের আশীর্বাদ।