দর্পণ ডেস্ক : থাইল্যান্ডে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ। রোববার সমাবেশের শেষদিনে রাজধানী ব্যাংককে অবস্থিত গ্র্যান্ড প্যালাস অভিমুখে যাত্রা করেছে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। গণতান্ত্রিক সংস্কারের পাশাপাশি দেশটির ক্ষমতাশীল রাজ পরিবারেও পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে তারা। বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রাজা মহা বাজিরালংকর্নকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করছে তারা। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভকারীদের মহাসমাবেশ রোববার শেষ হয়। এদিন দেশজুড়ে ধর্মঘটের আহ্বান জানায় বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশ সুপ্রিম কোর্টের সামনে গেলে বিক্ষোভকারীদের থামিয়ে দেয় পুলিশ। তবে একজন ছাত্রনেত্রী পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানাকুলওয়াসকে বিক্ষোভকারীদের দাবি সংশ্লিষ্ট একটি খাম এক পুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দিতে দেয়া হয়। ওই খামটি রাজার ব্যক্তিগত পরিষদের কাছে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক এই বিক্ষোভ সমাবেশ নজিরবিহীন।
কয়েক মাস আগ পর্যন্ত দেশটিতে রাজ পরিবারের প্রকাশ্যে সমালোচনা অচিন্তনীয় বিষয় ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে দেশজুড়ে রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠেছে। রাজার ক্ষমতা ও সম্পদের পরিমাণ কমিয়ে দিতে জোর দাবি ওঠেছে।
বিক্ষোভকারীদের এক নেতা পারিত চিওয়ারাক সমাবেশের উদ্দেশ্যে বলেন, এই বিক্ষোভের সবচেয়ে বড় জয় হচ্ছে, আমাদের মতো সাধারণ মানুষরাও রাজতন্ত্রের কাছে চিঠি পাঠাতে পারা। তিনি আগামী ১৪ অক্টোবর দেশব্যাপী ধর্মঘটের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া জনগণকে সিয়াম কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে আহ্বান জানিয়েছেন পারিত।
প্রসঙ্গত, এই ব্যাংকটির সবচেয়ে বড় অংশীদার রাজা বাজিরালংকর্ন। পারিত বলেছেন, ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলে ফেলুন। এরপর আপনার ব্যাংক বইটি পুড়িয়ে ফেলুন।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের কঠোর এক আইনের আওতায় রাজ পরিবারের সমালোচনা করা নিষিদ্ধ। সমালোচনাকারীদের সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে। যদিও রাজার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই আইনে কাওকে সাজা দিতে মানা করেছেন রাজা। তবে পারিত ও পানুসায়াসহ বহু বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন আইনে মামলা করা হয়েছে। কেবল পারিতের বিরুদ্ধেই দায়ের করা হয়েছে ১৮টি মামলা।
২০১৬ সালে সাবেক রাজা ভূমিবল আতুল্যতেজ ক্ষমতা ছাড়ার পর তার আসনে বসেন তার ছেলে বাজিরালংকর্ন। সাধারণত বেশিরভাগ সময় তিনি জার্মানিতেই কাটিয়ে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা তার বাজেট কমানো, রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে তার ব্যক্তিগত তহবিল আলাদা করে দেয়া ও রাজার সমালোচনা বিরোধী আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া, সংবিধান সংশোধনেরও দাবি জানিয়েছে তারা।