দিবাকর সরকার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : কলাপাড়ায় এবার জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত বিশেষ ভিজিএফ’র ১.৭৬০ মেট্রিক টন চাল’র কোন হদিস মিলছেনা। সোমবার সুবিধাভোগী প্রান্তিক জেলেরা চালের টোকেন নিয়ে খালি হাতে বাড়ী ফিরে যাওয়ার পর বিষয়টি জনসম্মূখে প্রকাশ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র বললেন বাজার থেকে চাল কিনে সমপরিমান চাল জেলেদের মধ্যে বিতরন করা হবে। পরে চালের বিষয়টি আমরা দেখবো। সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তা বললেন তিনি চাল উধাও হওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না। আগামীকাল তিনি এ বিষয়ে বলতে পারবেন। ইউএনও বললেন তদারকি কর্মকর্তা ও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার জিরো টলারেন্স। কাউকে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় লকডাউনে কর্মবিমূখ হয়ে পড়া দিন আনে দিন খায় শ্রেনীর মানুষের খাদ্য সহায়তায় সরকার যখন তাদের বাড়ী বাড়ী খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। ঠিক তখন কুয়াকাটা পৌরসভার অন্তর্গত ২২ প্রান্তিক জেলে তাদের দুই মাসের মাথা পিছু বরাদ্দকৃত ৮০ কেজি চাল আনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরে আসায় থলের বেড়াল বেড়িয়ে পড়ে। যদিও চাল বিতরন কালে তদারকি কর্মকর্তা, মেয়র সহ থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এরপরও ১.৭৬০ মেট্রিক টন চাল’র কোন হদিস মিলছেনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাজার থেকে সমপরিমান চাল কিনে মঙ্গলবার সকালে জেলেদের মাঝে বিতরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যদিও খাদ্য গুদাম থেকে ৫৩০ জন জেলের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ৪২.৪০০ মেট্রিক টন চাল গ্রহন করে কুয়াকাটা পৌরসভা। এরপর উত্তোলনকৃত চাল জেলেদের মাঝে বিতরনের জন্য মজুদ রাখা হয় পৌরসভা’র ষ্টোরে।

কলাপাড়া খাদ্য গুদাম’র সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক মো: জাকির হোসেন জানান, কুয়াকাটা পৌরসভার কাউন্সিলর মো: তৈয়বুর রহমান রেজিষ্ট্রারে স্বাক্ষর করে খাদ্য গুদাম থেকে ৪২.৪০০ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে নিয়ে যান। তাকে চাল ওজন করে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভিজিএফ চালের তদারকি কর্মকর্তা ও উপজেলা পল্লী দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, তার উপস্থিতিতে সঠিক ভাবে চাল বিতরন করা হয়েছে। ২২ জন জেলের চাল উধাউ হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। মঙ্গলবার বাদ পড়া ওই ২২ জেলের চাল বিতরন করা হবে।

কুয়াকাটা পৌরসভার কাউন্সিলর মো: তৈয়বুর রহমান বলেন, ’মেয়র আমাকে চাল উত্তোলনের জন্য ক’দিন আগে খাদ্য গুদামে পাঠায়। আমি গুদাম থেকে চাল এনে পৌরসভার ষ্টোরে রাখি। আজ বিতরন কালে চাল কম হওয়ায় মেয়র আমাকে চাল কিনে দিতে বলায় আমি কুয়াকাটা বাজার থেকে চাল কিনে দেই। চাল উত্তোলন ও বিতরন প্রক্রিয়ায় আবুল ফরাজী ছিল। আমি কখনও উত্তোলন কিংবা বিতরন করিনি। কিভাবে চাল কম হল বুঝতে পারছিনা।’

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আ: বারেক মোল্লা বলেন, ’২২জন জেলে চাল পায়নি। আমি বাজার থেকে কিনে তাদের চাল বিতরন করছি। তারপর চাল কোথায় গেল সেটা দেখবো।’

কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মো: শহিদুল হক বলেন, কুয়াকাটা পৌরসভার জেলেদের ভিজিএফ সংক্রান্ত চাল নিয়ে অভিযোগ শুনেছি। ডিসি স্যারের নির্দেশে তদারকি কর্মকর্তা ও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার জিরো টলারেন্স। কাউকে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই।