'করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চাই সর্বোচ্চ সতর্কতা'

বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা দেখানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছেন নিউইয়র্কের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার জ্যাকসন হাইটসে ডাক্তারবাড়ী ডট কমের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এমন আহ্বান জানিয়েছেন। 

তারা বলেন, যেহেতু ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে খুব সহজে ছড়ায় এবং এর প্রতিষেধক কোনো ভ্যাকসিন নেই, তাই সতর্ক হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

বক্তারা বলেন, উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই মুহূর্তে এই ভাইরাসের মাধ্যমে দেখা দেয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ব্যাপারে এরইমধ্যে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। 

ভাইরাসটি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ৬০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আরও ভয়ের কারণ নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের মোট ১০টি স্টেটে ভাইরাসটি সনাক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার কথা তুলে ধরেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। 

ডা. মুশফেকা মনসুর বলেন, “এরিমধ্যে নিউইয়র্কে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই স্টেটে বিভিন্ন দেশের মানুষ আসা যাওয়া করছে। ফলে ভয়ের যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। কেননা এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে ভাইরাসটি”। এ থেকে মুক্ত থাকতে বিশেষ সতর্কতা নেয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।  

ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, “আক্রান্ত মানুষের সহচার্য এড়িয়ে চলতে হবে। পাবলিক প্লেসে চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্ষ করা পরিহার করা জরুরি। 

অসুস্থবোধ করলে বাড়িতে থাকার উপর জোর দিয়ে তিনি জানান, অনেক বেশি ধরা হয় এমন জায়গা যেমন বাস ও ট্রেনের হাতল, লিফটের বাটন, পাবলিক টয়লেটের দরজা, সম্ভব হলে স্প্রে কিংবা ওয়াইপ দিয়ে মুছে নিতে হবে”। সম্ভব হলে ওয়ান টাইম গ্লাভস ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। 

ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, “অন্তত ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে ঠিকমতো হাত ধুতে হবে। সাবান না থাকলে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে, এমন হ্যান্ড সেনিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে”। 

ডা. মুশফেকা মনসুর আরও বলেন, যেহেতু উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সম্ভব হলে বিমান ভ্রমণ বাতিল করা ভালো। ভ্রমণ করতে হলেও মাস্ক ব্যবহারসহ বিশেষ সতর্কতার কথা বলেন তিনি। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বেশি জনসমাগম রয়েছে এমন জায়গা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এই সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ।

ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, “উদ্বেগ আছে। কিন্তু আতঙ্কিত হয়ে জীবনযাপন ছেড়ে দিলে চলবে না। সতর্ক থাকুন। একে অপরকে সহযোগিতা করুন। তথ্য জানার সুযোগ করে দিন”। 

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভাইরাসটিকে মোকাবেলা করতে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।  

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম