অনলাইন ডেস্ক: ব্রিফিংয়ে কথা বলছেন ওবায়দুল কাদেরসরকারি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। আজ সোমবার (৯ এপ্রিল) বিকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আন্দোলনকারী নেতৃত্বের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তরুণরা এই কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন। তারা আমাদের রাজনীতির অপরিহার্য অংশ, তারাই নতুন প্রজন্ম। আমরা এই পরবর্তী প্রজন্মের জন্যই রাজনীতি করি। তাই শেখ হাসিনার সরকার কখনও তরুণদের যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করেনি। সেই ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই প্রধানমন্ত্রী তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। আমার সঙ্গে আমার সহকর্মীরা আছেন। আন্দোলনকারীদের ২০ জনের প্রতিনিধি এখানে এসেছেন। তাদের বক্তব্য আমরা শুনেছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি নিয়ে একটা সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য এরই মধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েক মিনিট আগেও প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়টিতে সরকার রিজিড অবস্থানে নেই। আমি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছি, তাদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা ইতিবাচকভাবে দেখবো।’
পাশাপাশি, রবিবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর চালিয়েছে, তাদের শাস্তি পেতে হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ‘গতকাল (রবিবার মধ্যরাতে) উপাচার্যের বাসভবনে তাণ্ডব চলেছে। উপাচার্যের পরিবারকে বাগানে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। সেখানকার ভিডিও ফুটেজ থেকে এই তাণ্ডবের সঙ্গে যারা জড়িত বলে প্রমাণিত হবে, তাদের শাস্তি পেতে হবে। আমি আন্দোলনকারী মেধাবী তরুণদের প্রশ্ন করেছি, কোটা সংস্কারের সঙ্গে উপাচার্যের সম্পর্ক কী? কোটার সঙ্গে তো তার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি ও তার বাসভবন, তার পরিবার কেন আঘাত পারে? আন্দোলনকারীরা একমত হয়েছে, কিছু অনুপ্রবেশকারী, বহিরাগত ও সন্ত্রীরা এ কাজ করে থাকতে পারে। এখানে ডিএমপি কমিশনার আছেন। তিনি দেখবেন, নিরীহ কেউ যেন গ্রেফতার না হয়। যারা সত্যিকার অর্থে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেই যেন অ্যাকশন নেওয়া হয়।’ যারা এই আন্দোলনে বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসায় সরকার কোনও কার্পণ্য করবে না বলেও জানান তিনি।
আগামী ৭ মে’র মধ্যে সরকার কোটা পদ্ধতি রিভিউ বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে জানিয়ে সরকারের এই প্রতিনিধি বলেন, সরকার মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে। এর ফল কী হবে, সেটা আমরা জানাবো। সে পর্যন্ত কোটা সংস্কারের এই আন্দোলন স্থগিত থাকবে। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা এখানে রয়েছেন। তারাও ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখাতে সম্মত হয়েছেন।’
এর আগে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রতিটি দাবি পূরণ করার চেষ্টা করছেন। আমরা আশা করছি, তিনি আমাদের দাবি মেনে নেবেন। তিনি বলেন, ‘সরকার কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তা জানিয়ে দেবে। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো।’ আন্দোলন করতে গিয়ে যারা আটক হয়েছেন, তাদের সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হবে এবং আহতদের জন্য সরকার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে বলেও জানান তিনি।
সচিবালয়ের বৈঠক শেষে হাসান আল মামুন মোবাইল ফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা এখন শাহবাগে যাচ্ছি, সেখান থেকে আমরা আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেবো। আমরা সরকারের আশ্বাসে একমাস সময় দিয়েছি, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।

এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, অপহৃত শিশুকে উদ্ধার ও এর সাথে জড়িত দুই মেয়েকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে একটি মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির দুই এজেন্টকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।