গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, তিনি ‘শিক্ষক পলিটিকসের’ শিকার।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার মো. আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির এ অভিযোগ তোলেন দুই ছাত্রী। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন তারা। কিন্তু, তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করা হয় বলে অভিযোগ ওই দুই ছাত্রীর। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি তুলে ধরা হলে আলোচনায় উঠে আসে তা। বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয়সহ জেলার সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রে।

অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, কৌশলে দুই শিক্ষার্থীসহ তিন শিক্ষার্থীর থিসিসের দায়িত্ব নেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন সময় তাদের বাসায় ও ব্যক্তিগত চেম্বারে ডাকতেন এবং শরীর স্পর্শ করতেন। এমনকি মোবাইলফোনে ডেকে এনে তাদের দেওয়া হতো কু-প্রস্তাব। পরীক্ষার ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এ সুযোগ নিতেন তিনি।

তারা আরও দাবি করেন, ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। বরং বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। সম্প্রতি তাদের অভিযোগপত্রটি কে বা কারা ফেসবুকে পোস্ট করে দেন। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন মন্তব্য দিয়ে এ ঘটনার নিন্দা জানাতে শুরু করেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে চললেও সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় এসবের লাগাম টানা যাচ্ছে না। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আক্কাস আলী জানান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষক পলিটিকসের’ শিকার হয়েছেন। একই বিভাগের অন্য শিক্ষকের সঙ্গে বিভাগীয় প্রধান হওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা চলছিলো। এরই জের ধরে শিক্ষার্থী দিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।